মানুষ ঢুকছে ঘরে, পশুরা এখন শহরে

বাংলাদেশ

দিগন্তের আলো ডেস্ক :-
করোনার ভয়ে মানুষ গৃহবন্দি। সেই সুযোগে না–মানুষেরা তাদের জবরদখল হয়ে যাওয়া জল–জঙ্গলের অধিকার বোধহয় ফিরে পেতে চাইছে। দক্ষিণ আমেরিকার চিলি, মেক্সিকোতে বন্যপ্রাণিরা চলে আসছে শহরের ভেতরে। এমন সব প্রাণী, যেগুলো বিরল এবং বিপন্ন তালিকায় চলে গিয়েছিল। তাদের মূল শত্রু মানুষ ভয়ে ঘরে ঢুকে আছে দেখে তারা সাহস পেয়ে ফিরতে শুরু করেছে।

গত শনিবার চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো শহরের রাস্তায় নির্ভয়ে হেঁটে বেড়াতে দেখা গেছে একটি পুমা–কে। মূলত পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা, আকারে চিতাবাঘের মতো এই মাংসাশী চতুষ্পদটি এখন বিরল প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত এবং চিলির সংরক্ষিত প্রাণির তালিকায় পড়ে। সান্তিয়াগোর ব্যস্ত এলাকাগুলো করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জারি হওয়া লক ডাউনের কারণে এখন পুরোপুরি জনশূন্য। যানবাহনমুক্ত রাস্তাঘাট দেখে কৌতুহলী হয়ে, একজনের ব্যক্তিগত বাগানে আশ্রয় নেয়া পুমাটি রাস্তায় নেমে আসে। প্রায় ঘণ্টা তিনেক ঘুরে বেড়ায় অবাধে। ততক্ষণে খবর গেছে বন দপ্তরে। তাদের লোকজন এসে পুমাটিকে ধরে ফেলে। তারপর ফের তাকে ছেড়ে দেয়া হয় কাছের জঙ্গলে। পুমার সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকার জন্য নির্বিচার নগরায়ণকেই দায়ী করেন চিলের বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা। শহরের পরিধি বাড়তে বাড়তে আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এতে যেমন জঙ্গলের এলাকা কমে যাচ্ছে, পানির প্রাকৃতিক উৎসও শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছে অরণ্যের নিজস্ব খাদ্যশৃঙ্খল।

আরো অবাক কাণ্ড ঘটেছে মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে। চামড়ার মতো নমনীয় পিঠের সামুদ্রিক কচ্ছপ, যা লেদারব্যাক টার্টল নামে পরিচিত, কানকুন শহরের একটি হোটেলের বাগানে এসে ডিম পেড়ে বসেছে। অতিকায় এক কুমীর ঢুকে পড়েছে শহরের খাঁড়িতে। নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়াচ্ছে অগভীর খালের পানির, ইচ্ছে হলেই ডাঙায় উঠে এদিক ওদিক যাচ্ছে। শহরের মাঝখানে মানুষের তৈরি ইকোলজি পার্কে হঠাৎ হাজির হয়েছে তিনখানা চুরাসো পাখি। উজ্জ্বল কালো রঙ, মাথায় ঝুঁটি, নির্বিবাদে ডাল থেকে ডালে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। তবে সব অভিজ্ঞতাই যে স্বস্তির হচ্ছে, তা নয়। মেক্সিকো সিটির টুলুনে এক হোটেলের কর্মীদের ভয়ে দাঁতকপাটি লেগে গিয়েছিল। হোটেলের বাগানে, ঝকঝকে রোদ গায়ে মেখে রাজকীয় কায়দায় হেঁটে বেড়াচ্ছিল এক জাগুয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *