লক্ষ্মীপুরে সিএনজি চালকদের অসাবধানতায় ঘটছে দুর্ঘটনা” ঝরছে তাজা প্রাণ” অসহায় যাত্রী সাধারণ।

লক্ষ্মীপুর

সাহাদাত হোসেন (দিপু) :-
লক্ষীপুরে গত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে প্রায় এক থেকে দেড় শতাধিক মানুষ, আর আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ যার কোন হিসাব নেই। দুর্ঘটনায় অনেকে হাত পা হারিয়ে হয়ে গেছেন সারা জীবনের জন্য পঙ্গু। কিন্তু এতো দুর্ঘটনা হওয়া সত্বেও টনক নড়ছেনা প্রশাসনের, আইনকে অমান্য করে দিব্যি অতিরিক্ত যাত্রী সহ রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে কিচু চালক।
বিভিন্ন সংস্থা ও প্রশাসনের জরিপ অনুযায়ী অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকের ভুলের কারণে হয়েছে। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া বেশিরভাগ যাত্রী সিএনজি চালিত অটোরিকশার।
লক্ষীপুরের রায়পুর,রামগতি,রামগঞ্জ, ও চন্দ্রগঞ্জের,চাকুরীজীবি,ব্যবসায়ী,শিক্ষার্থী, শ্রমীক, ও যাত্রীসাধারণ মনে করেন বিগত এক বছরে যতগুলো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে তার সিংহভাগ ঘটেছিল সিএনজি চালিত অটোরিকশায়। এবং যতোগুলো তাজা প্রাণ ঝরেছে তার অধিকাংশ ছিল সিএনজির যাত্রী, ও চালকের ভুলের জন্য। আর এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক। যাত্রীসাধারন মনে করেন বেপরোয়া গাড়ি চালানো,অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া, ফিটনেস বিহীন গাড়ি, প্রতিযোগীতা দিয়ে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও কমবয়সী চালক, ও অধিকাংশ চালক আগে রিকশা চালাতো এবং কোন রকম ট্রেনিং ছাড়াই সরাসরি রিকশা থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক হওয়ার কারণে, রাস্তায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা ।
অথচ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে আইনকে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিনিয়োত অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেপরোয়া সিএনজি চালাচ্ছে অসাধু কিছু চালক। আর ঘটছে দুর্ঘটনা, মরছে মানুষ।
সিএনজি চালিত অটোরিকশা, যা সিএনজি নামেই পরিচিত। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ছাপানো নির্দেশিকা মোতাবেক এটি ৪ জনের যান। অর্থাৎ সামনে চালক একজন এবং পিছনে যাত্রী তিনজন। কখনো দেখা যায়, সামনে তিনজন যাত্রী, চালক যেন যাত্রীর কোলে বসে সিএনজি চালাচ্ছে। ফলে ঘটছে দূর্ঘটনা, প্রতিনিয়্যত ঝড়ে যাচ্ছে অকালে বহু তাজা প্রাণ। লক্ষীপুর জেলার অভ্যন্তরে সিএনজির বিকল্প অন্য কোন যানবাহন তেমন একটা না থাকায় যাত্রীরা অনেকটাই নিরুপায় হয়ে সিএনজি করে যাতায়াত করতে হয়। কোন যাত্রী চালকের অনিয়ম / অতিরিক্ত যাত্রী ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রতিবাদ করলে চালক উল্টো যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করে। এইভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লক্ষীপুর জেলার বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন সিএনজি চালিত অটোরিকশায় হাজার হাজার যাত্রী অনেকটা বাধ্য হয়েই যাতায়াত করতে হয়। ফলে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা ঝরছে তাজা প্রান।
কিছুদিন পূর্বে ছিল সিএনজি প্রতি দৈনিক চাঁদা (জিপি)। তখন চালকদের ভাষ্য ছিল আমরা বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয় দৈনিক দেড়’শ থেকে দুই ‘শ টাকা, মালিককে দিতে হয় প্রতিদিন ৭০০ টাকা জমা। তাই অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে। সিএনজি দুর্ঘটনা ও যাত্রী সাধারণের কথা বিবেচনা করে প্রশাসন দুর্ঘটনা রোধ করতে সকল সিএনজির সামনের দুই সিট খুলে ফেলার নির্দেশ প্রধাণ করে। যেন চালকের পাশে কোন যাত্রী না নিতে পারে। এবং সকল প্রকার চাঁদা/জিপি বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে চালকদের বাড়তি টাকা না দিতে হয় কিন্তু তারপরও ‘যে-ই লাউ, সে-ই কদু’।
সিএনজি চালক একটু সচেতন হলেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। সরকারী হিসেব মোতাবেক সিএনজিতে থাকবে তিনজন যাত্রী। যাত্রী প্রতি তিন টাকা কিলোমিটার হিসেবে সিএনজি চালক প্রতিবারে ভাড়া পাবে প্রতি কিলোমিটার নয় টাকা। সে হিসেবে সামনে অতিরিক্ত যাত্রী না নিয়ে আইন মেনে সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চালালে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়া আসে। অথচ চালকদের সামান্য লোভের কারণে সড়কে ঝরে যায় কতো প্রাণ ।

এসব বিষয়ে প্রশাসন যদি এখুনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন প্রতিনিয়োত ঘটবে দুর্ঘটনা তাই প্রশাসনের আরও দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যাত্রী সাধারণ।
লক্ষীপুর সদর হাইওয়ে (ঞর) এমরান হোসাইন দিগন্তের আলোকে বলেন রাস্তায় বেশিরভাগ দুর্ঘটনার কারণ সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো। তিনি আরও বলেন যারাই আইন অমান্য করে গাড়ি চালাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে ।
লক্ষীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান আরমান শাকিল বলেন আইন অমান্য করে গাড়ি চালালে তাঁদের বিরুদ্ধে আইন আনুক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *