দিগন্তের আলো ডেস্ক :
পাকিস্তানে উৎপাদিত ত্বকের রঙ ফর্সাকারী আট ধরনের ক্রিমে পারদসহ ক্ষতিকর অন্যান্য উপাদানের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়ায় সেসব বাংলাদেশে বিপণন নিষিদ্ধ করেছে বিএসটিআই।
সোমবার বিএসটিআইএর মান নিয়ন্ত্রণ (সিএম) বিভাগের সহকারী পরিচালক আবু হানিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
“এসব পণ্য আমদানি, খোলা বাজার কিংবা অনলাইনে বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল। পরবর্তীতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে,” বলেন এই কর্মকর্তা।
গত এক মাস ধরে খোলা বাজার ও অনলাইন শপিং প্ল্যাফর্ম ‘দারাজ’ থেকে ১৩টি ব্র্যান্ডের রঙ ফর্সাকারী ক্রিম সংগ্রহ করে বিএসটিআইর ল্যাবরেটরিতে সেগুলোর মান পরীক্ষা করা হয়। এসব ক্রিমের মধ্যে ছয়টিতে বিপজ্জনক মাত্রায় মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পারদ ও দুটি ব্র্যান্ডের ক্রিমে পারদ এবং হাইড্রোকুইনোন উভয়ই পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ মান (বিডিএস ১৩৮২:২০১৯) অনুযায়ী এ ধরনের ক্রিমে পারদের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ১ পিপিএম এবং হাইড্রোকুইনোনের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ৫ পিপিএম।
মাত্রাতিরিক্ত পারদ ও হাইড্রোকুইনোনযুক্ত এসব ক্রিম দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
বিএসটিআইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাকিস্তানের গৌরি কসমেটিকসের গৌরি ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে পারদের মাত্রা ৭৫৫.৮৫ পিপিএম; এস জে এন্টারপ্রাইজের চাঁদানী ব্র্যান্ডের ক্রিমে ৬২৯.৯৬ পিপিএম; কিউ সি ইন্টারন্যাশনালের নিউ ফেস ক্রিমে ৫৯০.৩৮ পিপিএম; ক্রিয়েটিভ কসমেটিকসের ডিউ ক্রিমে ২৮৫.৮৮ পিপিএম; গোল্ডেন পার্ল কসমেটিক্সের গোল্ডেন পার্ল ক্রিমে ৬৫৪.১৩ পিপিএম; পুনিয়া ব্রাদার্সের ফাইজা ক্রিমে ৫৯০.৪৫ পিপিএম; নূর গোল্ড কসমেটিকসের নূর ক্রিমে পারদ ১৯৩.৬৮ পিপিএম ও হাইড্রোকুইনোনের মাত্রা ১৯৮০.৬৮ পিপিএম; হোয়াইট পার্ল কসমেটিকসের হোয়াইট পার্ল প্লাস ব্র্যান্ডের স্কিন ক্রিমে পারদ ৯৪৮.৯৩ পিপিএম ও হাইড্রোকুইনোন ৪৩৪.৭৩ পিপিএম মাত্রায় পাওয়া গেছে।
সংগ্রহ করার সময় এসব পণ্যের মোড়কে কোনো আমদানিকারকের ঠিকানাও পাওয়া যায়নি। ফলে এগুলো শুল্কায়নের মাধ্যমে বৈধ পথে এসেছে নাকি অবৈধ পথে এসেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি বিএসটিআই।
“দারাজকে ইতোমধ্যেই চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিএসটিআইর ছাড়পত্র না নিয়ে এ ধরনের ক্রিম বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণ বেআইনি। এখন আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব,” বলেন বিএসটিআই কর্মকর্তা আবু হানিফ।
দারাজের জনসংযোগ কর্মকর্তা সায়ন্তনী ত্বিষা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএসটিআই ১৮১টি পণ্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছে যেগুলো বিক্রির জন্য বিএসটিআই অনুমোদন বা আমদানি লাইসেন্স প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে যেহেতু আমরা সেলার না, দায়িত্বটা পুরোপুরি আমাদের ওপরে পড়ে না।
“আমাদের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ক্রেতারা যেন ভালো পণ্য পায় সেজন্য বিষয়টি আমরা সিরিয়াসলি নিয়েছি। বিক্রেতাদের (সেলার) জন্য ১৮ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে বিএসটিআইর অনুমোদন নেওয়ার জন্য। এর মধ্যে যারা পারবে না, তাদেরকে ওয়েবসাইট থেকে রিমুভ করা হবে।”
বর্তমানে দারাজে ১৫ হাজারের ওপরে বিক্রেতা রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর