পুনরায় দায়িত্ব পেলে ভাইকেন্দ্রিক রাজনীতি মুক্ত ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে লক্ষ্মীপুর গড়বো : পিংকু

লক্ষ্মীপুর

সাহাদাত হোসেন (দিপু) :-
বিগত দিনে সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দল ও নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেছি। আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যদি মনে করেন, এ জেলার সভাপতির দায়িত্ব আমার কাছে নিরাপদ। তাহলে পুনরায় আমাকেই দায়িত্ব দিবেন। আবার অন্য কাউকে নেত্রীর যোগ্য মনে হলে, জেলার দায়িত্ব দিতে পারেন। এতে আমার বিন্দুমাত্র হিংস বা ক্ষোভ নেই। তবে পুনরায় দায়িত্ব পেলে লক্ষ্মীপুর জেলাকে ভাইকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে মুক্ত করবো। কারণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রিয় সংগঠনের জন্য বিগত দিনে কাজ করেছি এবং আগামীতেও দলকে ভালোবেসে কাজ করে যাবো।

জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল শীর্ষ সংবাদ’র একান্ত সাক্ষাতকারে কথা গুলো বললেন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিয়া গোলাম ফারুক পিংকু। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন নির্বাহী সম্পাদক রাকিব হোসেন রনি।

গনভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ফটোসেশনে মিয়া গোলাম ফারুক পিংকু
জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ে পিংকুর পরিকল্পনা : সাক্ষাতকারে জেলায় আ’লীগকে শক্তিশালি করার কথা উল্লেখ করেন পিংকু বলেন, সংসদ নির্বাচন বেশি দূরে নয়। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে করতে ইতোমধ্যে মেয়াদের দু’টি বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। বাকী তিন বছরও দেখতে না দেখতে কেটে যাবে। এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। এজন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী সামনে অগ্রসর হওয়া জরুরী। এ জন্য জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে উপ-কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ উপ-কমিটির সদস্যরা প্রত্যেক ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অন্তত ১শ’ ৫০জন করে নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ করবেন। পরে সদস্যদের মাঝে নির্বাচন বা সমন্বয় অধিকারের মাধ্যমে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হবে। তার নিজেরাই ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পুনাঙ্গ কমিটি গঠন করে নিবে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতাকর্মীরা সক্রিয় ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করলে তৃর্ণমূল আরো শক্তিশালী হবে। এতে লক্ষ্মীপুরের যেকোন কঠিন নির্বাচন মোকাবেলা করা আওয়ামীলীগের জন্য সহজ হবে বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু স্বার্থনেশ্বী কিছু নেতার কারণে দলের দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়। তারা নিজেদের স্বার্থে পকেট কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত আওয়ামীলীগ না করে নেতাকর্মীদের ভাই লীগের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। আমি এসব ভাইলীগের চরমভাবে বিরোধী

দুঃসময়ের স্মৃতিচারণ :
আওয়ামীলীগের দুঃসময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ২০০১ সালে জোট সরকার ক্ষমতায়। আওয়ামীলীগ তখন বিরোধীদল। বিএনপি-জামায়াতের হিংসাত্বক রাজনৈতির কবলে জেলায় সক্রিয় নেতাকর্মীরা নিজের বাড়িঘরে থাকতে পারেনি। তারা বিভিন্ন সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র মূলক মামলা-হামলার শিকার হয়ে ঢাকায় গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলো। সহায়তার হাত বাড়িয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কোন নেতা ছিলো না। সে মুহুর্তে তৎকালীন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি (বর্তমান সাংসদ) শাহাজাহান কামাল ঢাকায় নেতাকর্মীদের অসহায়ত্বের বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসেন। তাৎক্ষনিক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা রমনা হোটেলে বসে তালিকার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ নেতাকর্মীদের মাঝে বিতরণ করি। এরপর ২০০৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় আত্মগোপনকৃত নেতাকর্মীদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ব্যয় এবং লক্ষ্মীপুর জেলায় হামলায় হাত-পা হারিয়ে পঙ্গু হওয়া কর্মীদের চিকিৎসা ব্যয়, মামলার ব্যয় ও হাইকোট থেকে জামিনের ব্যবস্থা সহ দল বাঁচাতে ২০ কোটি টাকাও বেশি ব্যয় করেছি। সে সময় হাইকোটে কোট ফি দিয়ে (সাবেক আইনমন্ত্রী) এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খচরুর মাধ্যমে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা হয়। আল্লাহর রহমতে ব্যক্তিগত তহবিল থাকায় দলের জন্য কাজ করা সম্ভব হয়েছে। তখন আওয়ামীলীগের সভাপতি ঢাকায় স্ব-পরিবারে অবস্থান করলেও দশটা টাকা দিয়ে নেতকর্মীদের সহযোগীতা করতে পারেনি তিনি। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের (পৌর মেয়র) স-পরিবারে হত্যা মামলায় কারাগারে যান। তারা দাবী করে রাজনৈতিক কারণে তারা কারাবরণ করেছিলো। মুলত, তারা নিজেরদের ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার করতে গিয়ে বিভিন্ন মামলার শিকার হয়েছে। তার মধ্যে নুর ইসলাম হত্যাকান্ড উল্লেখযোগ্য। কিন্তু সেই অপবাধের ভোজাও আওয়ামীলীগের কাঁধে দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্ব পালনকালে দান অনুদান দেয়া :
সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে দান-অনুদানের বিষয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০০১ সালে বশিকপুর এলাকর আওয়ামীলীগের কর্মী জাহাঙ্গির আলম হিরন ও ২০১৪ সালে দত্তপাড়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মিলনের চোখ নষ্ট করে দেয় বিএনপির সন্ত্রাসী শামীম-আনোয়ার বাহিনী। সে সময় তাদের খোঁজখবর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির-সাধারণ সম্পাদক কেউই নেয়নি। ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে মিলনের চোখের অপারেশন করার ব্যবস্থা করেছিল
তথ্যসুএে প্রিয় রাকিব হোসেন রনি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *