দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থন নিয়ে জামাই মো. মহিন ও তার শ্বশুর আনল হকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জের ধরে একটি ‘সাজানো’ ঘটনায় মামলা দিয়ে জামাইকে কারাগারে পাঠান শ্বশুর। এরপর মেয়েকে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে আনল হক। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে জেলা শহরের টাউন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনল হকের বিরুদ্ধে মেয়ে জেসমিন আক্তার এ অভিযোগ করেন।
জেসমিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী মহিন, ভাশুর ও দেবররা নির্বাচনে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান উল্যা হিরনের (আনারস) সমর্থক ছিলেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। কিন্তু আমার বাবা আনল হক উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহর (মোটরসাইকেল) ভোট করেন। আমার বাবা চেষ্টা করেছিলেন মহিনকে তাদের সঙ্গে ভিড়াতে। এতে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এর জের ধরেই সাজানো ঘটনায় মামলা দিয়ে মহিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মহিনের সঙ্গে আরও তিনজন কারাগারে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেসমিনের শাশুড়ি নাছিমা আক্তার, ভাশুর নাছির উদ্দিন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু ছিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী এবং বিবাদীরা জেলার কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের উত্তর চারমার্টিন গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জেসমিন আরও বলেন, ৮ মে উপজেলা পরিষদের ভোট হয়। এদিন আমার বাবা ও স্বামী-ভাশুর-দেবরদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ১৫ মে কমলনগর থানায় আমার স্বামী-ভাশুর-দেবরদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় উল্লেখ করেন ‘যৌতুকের জন্য মহিন আমাকে নির্যাতন করে ও বাবার বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না’। কিন্তু ঘটনাটি মিথ্যা। বাবা আমার সংসার ভাঙতে চাচ্ছেন। চার বছর আগে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছে। কখনো মহিন আমাকে নির্যাতন করেনি। যৌতুকও দাবি করেনি। আমি স্বামীর সংসার করতে চাই।
জানা গেছে, জেসমিনের স্বামী মহিনসহ ভাশুর নাছির উদ্দিন (৩৪), মো. মনির (৩৮) ও মো. খোকন, আত্মীয় সবুজ (২৮) ও মো. কালুকে (২৬) আসামি করে আনল হক মামলা করেন। বিবাদীরা গত ১৯ মে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত আসামি নাছির ও কালুর জামিন দিয়ে বাকিদের কারাগারে পাঠান।
তবে এ ব্যাপারে আনল হক বলেন, নির্বাচন দ্বন্দ্বের ঘটনা মিথ্যা। আমাকে আসামিরা মেরেছে। আমি রক্তাক্ত জখম হয়েছি। এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। জেসমিন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু ছিদ্দিক বলেন, আনল হক মামলায় যে ঘটনা উল্লেখ করেছেন তা সত্য নয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই কথা কাটাকাটি হয়। আনল হকের সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় তিনি এখন সাজানো ঘটনায় মামলা করেছেন। তিনি নিজের মেয়ের সংসারও ভাঙতে চান।
এ বিষয়ে কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, মেয়ের জামাইসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আনল হক মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। এতে আদালত চারজনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। তারা এখন কারাগারে আছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।