কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করায় “আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ”

চন্দ্রগঞ্জ

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করায় লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। রোববার (৫ মে) রাতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন স্বাক্ষরিত শোকজের চিঠিটি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

জানা গেছে, গত ৬ মার্চ চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি দেওয়া হয়। চন্দ্রগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ওই কমিটি ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়েছিল। যদিও কেন্দ্রীয় অনুমতি ছাড়া কোনো কমিটি বিলুপ্ত ও নতুন করে কমিটি না দিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরপরও কাশেম চৌধুরী ও ওহাব হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি দিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ মার্চ মেয়াদোত্তীর্ণ দেখিয়ে একই চিঠিতে পুরনো কমিটি বিলুপ্ত ও ৫১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকুর চাচাতো ভাই নুরুল মোরছালিন মাছরুরকে আহ্বায়ক করা হয়। এ ঘটনায় ২৪ এপ্রিল বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি ভূঁইয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। একই অভিযোগের অনুলিপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকেও দেওয়া হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম চৌধুরী ও আব্দুল ওহাবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

শোকজ চিঠিতে লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে অবিহিত করে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো কমিটি ভাঙার এখতিয়ার কারো নেই। কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীরেকে কোনো পর্যায়ের কমিটিই ভাঙা যাবে না। এরপরও কেন দলের আদেশ অমান্য করে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে? বিষয়টি আদেশ দাতাকে কারণ দর্শানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে সম্মেলন ছাড়া কোনো ধরনের কমিটি না ভাঙার জন্য জানানো হলো। এটি চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দত্তপাড়া ও হাজিরপাড়া ইউনিয়নের জন্য প্রযোজ্য।

রোববার (৫ মে) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন থানা কমটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় চিঠির বিষয়টি অবগত হয়েছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলন ছাড়া কোনো কমিটি ঘোষণার সুযোগ নেই। সে হিসেবে হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্বের কমিটি বহাল রয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শোকজপ্রাপ্ত চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, আমরা হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। শোকজের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। কেন্দ্র থেকে কোনো চিঠি দিয়েছে কি না তাও জানি না।

বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি ভূঁইয়া বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া চন্দ্রগঞ্জ থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের কমিটি ভাঙতে পারেন না। এজন্য আমি কেন্দ্রে অভিযোগ দিয়েছি।

কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ৫ মার্চ একই থানাধীন দত্তপাড়া ইউনিয়নের পুরনো কমিটি বিলুপ্ত করে ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চৌধুরী ও আব্দুল ওহাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *