দিগন্তের আলো ডেস্ক :-
লক্ষ্মীপুরে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা সদর হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড়ে আহত হয়েছেন তারা।
আহতদের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, মোহাম্মদ পাটওয়ারী (১৫ মাস), মো. মুয়াজ (১৬), আবির (আড়াই বছর), আব্দুর রহিম (৫৫), রহিমা খাতুন (৩০), রিনা আক্তার (২৯), শামছুন নাহার (৪৫), মিতু (২৩), ফরহাদ (৮), হোসনেয়ারা (৩৫), রিহান মাহমুদ (৬) ও সাব্বির আহমেদসহ (১৮) শতাধিক রোগী। গত ৪ দিনে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে দুই শতাধিক রোগীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ পাটওয়ারী তার ১৫ মাস বয়সী ছেলে মোহাম্মদ পাটওয়ারীকে হাসপাতালে এনে কুকুরে কামড়ের ভ্যাকসিন দিয়েছেন। মোহাম্মদের হাতে পাগলা কুকুর কামড় দিয়েছে বলে জানান তিনি।
চররুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের বতু মাঝি বাড়ির ৩৫ বছর বয়সী হোসনেয়ারা বেগমের গালে কামড় দেয়। তিনি বলেন, আমি মোবাইল ফোনে বিদেশে আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করে একটি কুকুর এসে আমার গালে কামড় দেয়।
একই গ্রামের মনুর বাপের বাড়ির ৬ বছর বয়সী রিহান মাহমুদ নামে এক শিশুকেও হাসপাতালে কুকুরের কামড়ের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সকালে বাড়ির উঠানে রিহান খেলছিল। এসময় কুকুর এসে রিহানের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। কুকুরটি তার হাতের বাহু ও পিঠে তিনটি কামড় দেয়। রিহানের বাবা আবুধাবি প্রবাসী হারুনুর রশীদ বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিড়ালের কামড়ে আহত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ এলাকার ১৮ বছর বয়সী সাব্বির আহমেদ হাসপাতাল এসে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তিনি বলেন, বিড়াল নিয়ে দুষ্টামি করছিলাম। এরমধ্যেই বিড়াল আমার হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। কোনো সমস্যা হয় কি না, এনিয়ে ভয় লাগছে। এজন্য হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছি।
কুশাখালী ইউনিয়নের ঝাউডগি গ্রামে বাড়ির সামনে খেলতে গেলে ফরহাদকে কুকুর কামড় দেয়। তাকে ভ্যাকসিন দিতে নিয়ে এসেছে তার বাবা আনোয়ার হোসেন। কয়েকদিন আগে আনোয়ারকেও কুকুরে কামড় দিয়েছে বলে জানা গেছে।
চরমনী মোহন ইউনিয়নের করাতির হাট বাজারের ফার্মাসিস্ট জহিরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় প্রচুর রোগী রয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে যেতে বলেছি। হঠাৎ করে কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে।
ভ্যাকসিন প্রদানকারী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আব্দুর রব বলেন, সকাল থেকে ভ্যাকসিন দিচ্ছি। বিপুল সংখ্যক রোগী এসেছে। এখনো হিসাব করতে পারিনি। রোগীদের হাত-পিঠ ও গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুকুর বিড়ালের কামড়ের দাগ রয়েছে।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান হোসেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে সকাল থেকে শতাধিক রোগী এসেছে। তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। কুকুর-বিড়াল থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
- লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আনোয়ার হোসেন বলেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। শাকচর, চররুহিতা ও হামছাদী এলাকা থেকে রোগী বেশি এসেছে। পাগলা কুকুরের কামড় থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃপক্ষ কুকুরের ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রেখেছেন বলে শুনেছি।