অপরাধ দমনে সিসি ক্যামেরার আওতায় লক্ষীপুর

অপরাদ আইন আদালত

 

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-

নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (২০০ সিসি ক্যামেরা) আওতায় আনা হয়েছে। জেলা পুলিশের উদ্যোগে কয়েকদিন আগে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে পুলিশ সুপার কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে। পুরো শহরসহ দালালবাজার পর্যটন এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় এলে অপরাধ কমবে। আর এর সুফল কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে পরিধি বাড়ানোর কথা বলেন পুলিশ।

শুক্রবার লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে প্রায় ২০০ (দুই) শত সিসি ক্যামেরা স্থাপন কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, পিপিএম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), লক্ষ্মীপুর (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ সোহেল রানা, অফিসার ইনচার্জ (লক্ষ্মীপুর মডেল থানা) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এ কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, ২০১৬ সালেও লক্ষ্মীপুর শহরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এতে কমেছিলো অপরাধ। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার কিছুদিন পরই ক্যামেরাগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ক্যামেরা চুরি যাওয়ার অভিযোগও ছিলো। এবার তারা ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান না।

শনিবার (২৭ জানুয়ারী) লক্ষ্মীপুর মডেল থানার ওসি মোঃ সাইফুদ্দিন আনোয়ার শীর্ষ সংবাদ প্রতিবেদককে বলেন, পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ ‘ব্যতিক্রমী’ এ উদ্যোগ নিয়েছেন। ঝুমুর বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জজ আদালত চত্তর, বাগবাড়ি উপজেলা পরিষদ গেট, মেঘনা রোডের মাথা সহ শহরে এবং দালালবাজার খোয়াসাগর দিঘিরপাড় পর্যটন এরিয়াসহ অন্তত ৪০টি জায়গায় ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জেলা পুলিশের পক্ষে শহর ও উপশহরে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও সহজ হবে।

সদর থানা পুলিশ জানান, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর-সদর একাংশ) আসনের এমপি অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী সিসি ক্যামেরা কিনতে অর্থায়ন করেছেন।

পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলা শহরসহ দালালবাজার পর্যটন এরিয়ায় স্থাপিত ২০০ সিসি ক্যামেরার সুফল মিললে পর্যায়ক্রমে উপজেলা ও থানা শহর এলাকায়ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।’

লক্ষ্মীপুর শহরের আলিয়া মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হুমায়ূন কবির তোফায়েল জানান, শুধু সিসি ক্যামেরা স্থাপর করলেই হবে না, এগুলো নিয়মিত মনিটরিং ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। যদি তা না করা হয় তাহলে অতীতের মতো এই উদ্যোগ কোনো কাজে আসবে না। একই মন্তব্য করে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হুসাইন আহাম্মদ হেলাল বলেন, এই ক্যামেরার মাধ্যমে শনাক্ত হওয়া অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে তা প্রচার করতে হবে। তাহলে দুর্বৃত্তরা আর শহরে অপরাধ করার সাহস পাবে না।

প্রসঙ্গত: পুলিশের সিলেট রেঞ্জের বর্তমান ডিআইজি শাহ মিজান সাফিউর রহমান ২০১৬ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। তখন তিনি শহরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন। এতে শহরে অপরাধীদের তৎপরতা অনেকাংশে কমে যায়। তবে রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের অভাবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা অকার্যকর হয়ে পড়ে। অপরাধী চক্র বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা চুরি সহ তার কেটে দেয়। বাকি সিসি ক্যামেরা গুলোও অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *