দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) সেলিনা ইসলাম বলেছেন, নৌকার প্রার্থী একটি ভিডিওতে বলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন। কিন্ত নৌকার কর্মীরা আমার লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আমার এজেন্ট হলেই ৭ জানুয়ারির পর দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি কর্মীদেরকে বলেছি, কারো ঘর জ্বালিয়ে দিলে, আমি ঘর করে দেব।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে রায়পুর পৌরসভা লেংড়া বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। সেখানে দুর্বৃত্তরা তার লোকজনের ওপর হামলা করেছে বলে জানিয়েছেন সেলিনা ইসলাম। এ সময় এক কর্মীকে মারধর করে আহত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে তার নাম-পরিচয় জানাননি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম বলেন, আমার স্বামী কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মেঘনা নদীর টুনুর চরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছেন। পাপুল ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি যখন এমপি ছিলেন তখন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভাই আদনান চৌধুরীকে ব্যক্তিগত সহকারী রাখা হয়েছিল। আদনান তখন পাপুলের সই নকল করতো। ধরা পড়লে আদনানকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। কোন দিক থেকে ষড়যন্ত্রগুলো হয়েছে তা সবাই জানে। আমরা বিদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা দেশে এনেছি। সেই টাকার কর দিয়েই আমি সিআইপি হয়েছি। নির্বাচনকালে সেসব বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।
তিনি বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদী এ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুন্দর হবে। প্রতিবন্ধকতা আমার কাছে কখনো মনে হয় না। এটা আমি অনুভব করি না। আমার অনুভূতিতেও আসে না। মনোনয়নপত্র মামলার ঘরে টিক চিহ্ন না দেওয়ায় আমার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তা ফিরে পাইনি। পরে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পাই। এসব করতে গিয়ে আমার ২৫ দিন সময় নষ্ট হয়েছে। এতে নির্বাচনী এলাকায় আসতে আমার সময় লেগেছে। কিন্তু আমার লোকজন এর আগে থেকেই কাজকর্ম শুরু করেছে। এর মধ্যেই নৌকার কর্মীরা আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রচারণার মাইক-গাড়ি ভাঙচুর করেছে। লোকজনকে ধরে এনে নৌকার প্রার্থীর কার্যালয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়েছে। মাইক্রো দিয়ে গিয়ে ১০-১৫ জন লোক আমার কর্মীদের হুমকি দিয়ে আসছে। দলের প্ল্যাটফর্মে থেকে নির্বাচন আর স্বতন্ত্রে নির্বাচন ভিন্ন বিষয়। আপনি যদি শক্তিকে অপব্যাবহার করেন, এটিকে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছি, অন্য কিছু না।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ ফয়েজ উল্লাহ শিপন উপস্থিত ছিলেন। তিনি সেলিনার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা কুয়েতে দণ্ডপ্রাপ্ত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী। তিনি কুমিল্লার মেঘনা আসনের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন নয়ন নৌকার প্রার্থী। নির্বাচনের মাঠে নয়নের স্ত্রী রুবিনা ইয়াছমিন লুবনাও (তরমুজ) রয়েছেন। তবে লুবনার কোনো প্রচারণা নেই।
আসনটিতে আরও ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ (লাঙ্গল), জাসদের মো. আমির হোসেন (মশাল), তৃণমূল বিএনপির আব্দুল্লাহ্ আল মাসুদ (পাট), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির জহির হোসেন (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেস জোটের মো. মনসুর রহমান (ডাব), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. মোরশেদ আলম (চেয়ার), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. শরিফুল ইসলাম (মোমবাতি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. ফরহাদ মিয়া (হাত ঘড়ি) মুক্তিজোটের মো. ইমাম উদ্দিন সুমন (ছড়ি) ও এএফ জসিম উদ্দিন আহমেদ (ট্রাক)।