দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
লক্ষীপুরে নানির কাছ থেকে তার আপন নাতির বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল করে নিজের নামে নানির জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হলে ভুক্তভোগী ফুলবানু আহসান হাবীব দলিল গ্রহিতা, দলিল লেখক, দলিলের তিন সাক্ষীসহ ৫ জনকে আসামি করে লক্ষীপুর আদালতে মামলা করেছেন।
মামলা এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জানা যায় , লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রতনপুর গ্রামের রতনপুর মৌজার বিএস ৯৭৭ দাগের ওয়ারিশ সুত্রে ৯ ডিসিম জমির মালিক ফুলবানু বিগত কয়েকবছর আগে ফুলবানুর মেয়ে ছায়েরা বিবি তার স্বামীর বাড়িতে থাকতে না পারায় স্বামী সন্তান সহ ফুলবানু তার স্বামীর বাড়িতে থাকতে দেয়, পরে ফুলবানুর মেয়ে ছায়েরা তার মা ফুলবানুকে অনুরোধ করে ওয়ারিশের সম্পত্তি থেকে তার নামে কিছু সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য মানবিকতা বিবেচনা করে এতে ফুলবানু রাজি হয়, তবে এতে শর্ত থাকে মরন পর্যন্ত ফুলবানুর বরণ পোষণসহ যাবতীয় সকল খরচের দায়িত্ব তার মেয়ে ছায়েরা বানু নিবে। পরক্ষণে ফুলবানুর নাতি হাবিব বিভিন্ন জায়গায় বলিয়া বেড়ায় যে ফুলবানুর ওয়ারিশের সম্পত্তি থেকে তাঁকে দুই ডিসিম হেবা ঘোষণা দলিল দ্বারা দ্বখল বুঝাইয়া দেয়, কিন্তু এই বিষয়ে ফুলবানুকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
বিষয়টি জানাজানি হলে জমির প্রকৃত মালিক ফুলবানু লক্ষীপুর সদর ও চন্দ্রগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার ভূমি অফিসে যোগাযোগ করলে জাল দলিলের বিষয়টি নিশ্চিত হন এবং ২ নবেম্বর ২০২২ লক্ষীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দলিল গ্রহিতা রতনপুর গ্রামের হোসেন আহম্মেদের ছেলে আহসান হাবীব , দলিল লেখক চাঁদখালী গ্রামের নুরুল আমিন , দলিলের সাক্ষী বান্চানগর গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে ওহিদ, যাদৈয়া গ্রামের মৃত ওজিউল্ল্যার ছেলে আবদুল কাদের একই গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে শামসুল আলমকে আসামি করে মামলা করেন।
এ বিষয়ে দলিলের সাক্ষী যাদৈয়া গ্রামের শামসুল আলমের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি নামাজ পড়বেন বলে পোনটা কেটে দেন, অনেক চেষ্টা করেও বাকী স্বাক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই।
দলিল লেখক জিল্বানি জানান, এ দলিলের বিষয়ে যে এতো কিছু আছে আমি কিছুই জানি না। আহসান হাবীব এই দলিলের মুল মালিক কাগজপত্র ও সত্যতা গোপন করে আমার কাছে এসেছে পরে আমি দলিলটা লিখে দিয়েছি মাত্র। দাতা ও গ্রহিতা কাউকে আমি চিনি না। এমন প্রায়ই হয়। এক মোক্তার আরেক মোক্তারকে শনাক্তকারী বানান। দলিলদাতা ও গ্রহিতা আমাকে চিনে কিনা জিজ্ঞেস করুন।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর জজকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মাহমুদুল করিম টিপু জানান, । ভুক্তভোগী নারী আমার কাছে এসেছিলেন। আদালতের দারস্থ হয়ে মামলা করেছেন । এ ঘটনায় যারা জড়িত আদালতে তা প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি ।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (সিআইডি) মোঃ শাহআলম বলেন ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন সহ বাদী বিবাদী ও এই মামলার সাথে জড়িত প্রায় সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।