সাহাদাত হোসেন (দিপু)
লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার বহু বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী মান্দারী হাট- বাজার । প্রতি বছর হাট থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করছে সরকার। আর কোটি কোটি টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। এরপরও নানা সমস্যায় জর্জরিত হাটটি। ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় পুরো হাট এলাকায়। নোংরা আবর্জনা আর খানাখন্দের কারণে ব্যবসা করতে গিয়ে চরমভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শত শত ব্যবসায়ী। বিশেষ করে বৃষ্টির এই সময়ে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই হাটের অলিগলিসহ কয়েকটি প্রবেশ পথ পানিতে ডুবে যায়। ফলে হাটে বেচাকেনা করতে আসা হাজারও মানুষ পড়েন সীমাহীন দুর্ভোগে। এক-দুই বছর নয়, এই দুর্ভোগ চলছে হাটের জন্মলগ্ন থেকেই।
সরেজমিন দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই হাট ও বাজারটির দুর্ভোগের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষ। সামান্য বৃষ্টিতে হাটের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় দেখা দিয়েছে জনদুর্ভোগ। । দীর্ঘদিনেও এই অবস্থার কোনো প্রতিকার মেলেনি।
স্থানীয়রা জানান, বহু বছরের পুরাতন ঐতিহ্যবাহী এই হাটটিতে মান্দারী ইউনিয়ন ছাড়াও দত্তপাড়া, ভাঙ্গা খাঁ , দিঘলী, হাজিরপাড়া, কুশাখালী, তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার মানুষও ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আসেন। তবে জলাবদ্ধতা ছাড়াও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে এই হাটে। রাস্তায় বিদ্যুতের অধিকাংশ খুঁটিতে নেই কোনো ল্যাম্প। ফলে রাতের বেলায় অনেক সমস্যা হয় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। মান্দারী হাট-বাজার থেকে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও, বিন্দু মাত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
মান্দারী বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মোরশেদ জানান, সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় গলির পথ। মোরশেদ আক্ষেপ করে বলেন, হাঁটু জল মারিয়ে দোকান খুলে দেখি আমার ওষুধ ঘরের ভেতর পানিতে ভাসছে। এর কি কোনো প্রতিকার নেই?’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্বে থাকা কিছু সদস্য জানান, বাজারের ধান হাটা ও গরু হাটার কয়েকটি স্থানে নলকূপ ও শৌচাগার নির্মাণ করা হলেও অল্প দিনেই সেগুলো ভরাট হয়ে যায়। ফলে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে যত্রতত্র প্রস্রাব ও মলত্যাগ করায় উৎকট গন্ধে দোকানদার ও হাটুরেদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে পরিকল্পিত ও মানসম্মত উন্নয়ন কাজ না করায় রাস্তা-ঘাট ও বাজারের এমন অবস্থা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। মান্দারী বাজারের বনিক সমিতির সভাপতি শামসুদ্দিন সাজু জনান, বাজারের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মান্দারী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, উর্ধ্বতন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ অবিলম্বে বাজারের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে বাজারের সকল সমস্যার সমাধান করবো।
এ বিষয়ে লক্ষীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাছুম বলেন, ‘বৃহত্তম মান্দারী হাট-বাজারের সমস্যার কথা জানার পর কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত এই কাজগুলো শেষ করলে হাটের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তখন হাটে ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা মানুষজনের ভোগান্তি পোহাতে হবে না।’