দিগন্তের আলো ডেস্ক :
ফেনীতে মহাসড়কে গাড়ি থেকে ২০টি স্বর্ণবার ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (ওসি) মো. সাইফুল ইসলামকে চারদিন ও অপর ৫ জনকে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বুধবার বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ খান আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। ফেনী আদালত পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানি জানান, বুধবার দুপুর আড়াইটার পর ডাকাতি মামলার আসামি ফেনী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) অভিজিৎ বড়ুয়া ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ রানাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে তোলা হয়। এ সময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ খানের আদালতে আসামিদের আইনজীবীরা তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। অপরদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়াকে চারদিন ও অপর ৫ আসামিকে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে আসামিদের আদালত থেকে রিমান্ডের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে ৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের পর ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
নু ঞধনড়ড়ষধণড়ঁ গধু খরশব
এ এক অন্যরকম রাত!
পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী জানান, চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশ গত ৮ই আগস্ট রোববার চট্টগ্রাম থেকে ২০টি স্বর্ণের বার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেহপুর রেলওয়ে ওভারপাসের নিচে ফেনী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তার গাড়ির গতি রোধ করে। পরে গাড়ি তল্লাশির এক পর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলামসহ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশের কাছ থেকে স্বর্ণের বারগুলো ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশ ফেনী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তিনি অভিযোগকারী চার পুলিশ কর্মকর্তাকে শনাক্ত করেন। এসময় চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দুইজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেন। অভিযুক্তরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০টি স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাশ বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফেনী মডেল থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করেন। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাতেই থানায় হন্তান্তর করা হয়। এদিকে ছিনতাই হওয়া বাকি পাঁচটি স্বর্ণবার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ছিনতাই ও উদ্ধার হওয়া স্বর্ণবারগুলো বৈধ না অবৈধ তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে মন্তব্য করা যাবে।