সাহাদাত হোসেন দিপু :-
লক্ষীপুর একটি হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছেন তিন যুবক। প্রতিদিন সকাল থেকে বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তায় ঘুরে তারা এই চাঁদাবাজি করছেন। হাতির সামনে পড়ে আতঙ্কে টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন দোকানি বা পথচারীরা। গত ২ দিন ধরে লক্ষীপুরে প্রকাশ্যে তারা এই চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ।
রাজশাহী থেকে বড় হাতিটি নিয়ে তিন যুবক লক্ষীপুর এসেছেন। দিনের বেলায় তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে টাকা আদাই করছেন। এরপর রাত হলে আশ্রয় নিচ্ছেন রাস্তার পাশে কোন বাগানে। প্রতি বছর চার পাঁচবার লক্ষীপুরে এভাবে হাতি নিয়ে টাকা তুলতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকালে হাতিসহ তিন যুবককে রামগঞ্জ ডল্টা ও দেবিদাসপুর এলাকায় দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, এক যুবক হাতির পিঠে চড়ে বসেছেন। হাতির পিছে হাঁটছেন এক যুবক পাশে হাটচেন অন্য যুবক । কোনো গাড়ি, মোটরসাইকেল, ভ্যান বা দোকান পেলে পথ আগলে দাঁড়াচ্ছে হাতিটি। এরপর শুঁড় বাড়িয়ে দিয়ে টাকা নিচ্ছে লোকজনের কাছ থেকে। সেই টাকা আবার শুঁড় উুঁচিয়ে দিচ্ছে পিঠে চেপে বসা সেই লোকটির কাছে। জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে ১০-২০ টাকা। দশ টাকার কম হলে টাকা নিচ্ছে না হাতি। তখন পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকছে। চাহিদামত টাকা পেলেই তারপর পথ ছেড়ে দাঁড়াচ্ছে। দুই-একজন স্বেচ্ছায় টাকা দিলেও অধিকাংশ মানুষ দিচ্ছেন বাধ্য হয়ে।
দোকানে সদাই কিনতে আশা মুক্তা আক্তার নামে এক গৃহবধূ হাতির চাঁদাবাজির শিকার হন। তিনি ২০ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।
মুক্তা আক্তার বলেন, সদাই কিনতে দোকানে ডুকা মাত্রই হাঁতি এসে সামনে দাঁড়িয়েছে। আমি ভয় পেয়ে গেছি হাতিটাকে নাকি টাকা দিতেই হবে। তাই বাধ্য হয়ে ২০ টাকা দিলাম। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত পথ ছাড়ছিল না।
ভ্যান চালক মোখলেস বলেন, আমাদের কাছ থেকেও হাতি দিয়ে টাকা তুলে।
হাতির সাথে থাকা একজনের নাম রাব্বি হাসান। তিনি বলেন, ২ দিন আগে রাজশাহী থেকে আইছি। দিনে তিন-সাড়ে তিন হাজার টাকা আয় হয়। রাত হলে এক জায়গায় হাতি বেধে রেখে কলাগাছ এনে দিই। হাতি কলাগাছ খায়। আমরা পাশে ঘুমাই।
লক্ষীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাছুম বলেন হাতি দিয়ে টাকা তোলা অবশ্যই চাঁদাবাজি, এরা একদল সংঘবদ্ধ চক্র সারাদেশে হাতি দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে, এদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থ নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
নাম না বলা শর্তে জেলার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, হাতি দিয়ে কয়েকজন দুই টাকা, পাঁচ টাকা, দশ টাকা তোলে। এটাকে চাঁদাবাজি বলে না। তাছাড়া কেউ অভিযোগ করে না। ওদেরওতো পেট আছে। বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার পরামর্শ এই কর্মকর্তার।