ট্রাকচালকের স্ত্রীকে নিয়ে গেল পুলিশ, এসপির কাছে আবেদন

বাংলাদেশ

 

দিগন্তের আলো ডেস্ক :

ট্রাকচালক মনিরুল ইসলামকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন লাইলাতুন নেসা লতা। তার পর সংসার করছিলেন স্বামীর বাড়িতে। তবে বিয়ে মেনে নেননি লতার বাবা। তিনি অভিযোগ করেন থানায়।

পুলিশ মনিরুলের বাড়ি থেকে লতাকে নিয়ে গিয়ে বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে। তবে মনিরুল তার স্ত্রীকে ফেরত পেতে গত শুক্রবার রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

মনিরুলের বাড়ি রাজশাহীর বেলপুকুর থানার মাহেন্দ্রা এলাকায়। তার বাবার নাম আবদুস সালাম। আর লতা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার গৌরিহার গ্রামের আবদুল লতিফের মেয়ে।

এর আগেও লতার একটি বিয়ে হয়েছিল। আদালতে লতা সেই স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন। তবে মনিরুলের অভিযোগ– আগের স্বামীর কাছে পাঠাতে লতার বাবা দুর্গাপুর থানা পুলিশকে দিয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে।

এসপির কাছে দেয়া আবেদনে মনিরুল বলেন, গত বছরের ২৬ নভেম্বর তিনি লতাকে বিয়ে করেন। বিয়ের নিবন্ধনও করা হয়েছে। পরে লতা ও মনিরুল দুজনেই এফিডেভিটে বিয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। এর পর থেকে তারা সংসার করে আসছিলেন। আড়াই মাস পর হঠাৎ গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে সাদা পোশাকে দুর্গাপুর থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে ‘অভিযোগ আছে’ জানিয়ে লতাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

মনিরুল বলেন, তার বাড়ি বেলপুকুর থানা এলাকায়। কিন্তু বেলপুকুর থানাকে অবহিত না করেই তার বাড়িতে দুর্গাপুর থানা পুলিশ এসে লতাকে নিয়ে গেছে। পরে তিনি দুর্গাপুর থানায় যান।

থানার ওসি খুরশিদা বানু কণা তাকে জানান, লতার বিরুদ্ধে মামলা আছে। কিন্তু সেটি মিথ্যা কথা। পরে ওসি লতাকে তার বাবার কাছে হস্তান্তর করেন। ওসি মনিরুলকে বলেন, এ বিষয়ে লতার বাবার বাড়ি গেলে হামলা ও মামলা করতে পারে। এই ভয় দেখিয়ে তিনি মনিরুলকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

মনিরুল অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে ওসি খুরশিদা বানু কণা তার স্ত্রীকে তার বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে বাবার কাছে দিয়েছেন। লতার কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। আর শ্বশুরবাড়ি না যাওয়ার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন ওসি। এখন লতার বাবা আবদুল লতিফ তার মেয়েকে আটকে রেখেছেন।

মনিরুল তার আবেদনে স্ত্রীকে ফেরত এনে দেয়ার জন্য এসপির কাছে আবেদন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এ ব্যাপারে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, আবেদনের বিষয়টি তিনি জানেন না। সেটি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

দুর্গাপুর থানার ওসি খুরশিদা বানু কণা বলেন, মেয়েকে উদ্ধারের জন্য আবদুল লতিফ থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন। তার আগের স্বামীও আবেদন করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে লতাকে উদ্ধার করে বাবার জিম্মায় দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, লতা তার বাবার কাছে থাকতে চান বলে থানায় লিখিত দিয়ে গেছেন। চাইলে তো মনিরুলের কাছেই যেতে পারতেন।
যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *