দিগন্তের আলো ডেস্ক :-
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে অবৈধ ইটভাটার চিমনি ধসে দুই ভাইসহ ৩ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৩ মে) দিবাগত রাতে রামগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ওরফে এসপি দেলুর ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে আমির হোসেন ডিপজল ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ডিফজল উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের মদিনা ব্রিকসের মালিক ও স্বপন মিয়া ওই ব্রিকসের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার)। তাঁদেরকে সোমবার (২৪ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এরআগে সকালে নিহত বেলাল ও ফারুকের ভাই হেলাল হোসেন বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও নিহতদের পরিবার সূত্র জানায়, কাউন্সিলর দেলোয়ারের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রবিবার রাতে সমঝোতার বৈঠক বসানো হয়। সেখানে ভাটার মালিক ডিপজল ও ম্যানেজার স্বপনসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডিপজল ও স্বপনকে আটক করে। সকালে মামলার পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা হেলাল হোসেন জানিয়েছেন, সমঝোতার বৈঠক ডেকে কাউন্সিলর দেলুসহ কয়েকজন জোর করে তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের মুচলেকা নিয়েছেন। সেখানে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ২ লাখ ও দাফনের জন্য ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁদেরকে বের করে দেওয়া হয়। এসময় বাড়াবাড়ি করলে পরিনতি ভালো হবে না বলে হুমকিও দেওয়া হয়। নিহত অপরজনের নাম রাকিব হোসেন। নিহতরা জেলার কমলনগর উপজেলার বাসিন্দা।
হেলাল অভিযোগ করে আরও জানান, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ভাটা মালিকের সঙ্গে ৭ লাখ টাকায় দফারফা করা হয়। বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই তাঁদেরকে কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ডিপজলের স্ত্রী লোকজন নিয়ে আমার কাছে এসেছে। আমি ঘটনাটি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কাউকে কোন হুমকি দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আটক দুইজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। ইটভাটাটি পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে রবিবার (২৩ মে) মদিনা ব্রিকসের চিমনির দেয়াল ধসে দুই ভাইসহ ৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর ও রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন আরো ৮ শ্রমিক। ওই ইটভাটার অনুমোদন ছিল না বলে স্থানীয় প্রশাসন থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।