সাহাদাত হোসেন (দিপু)ঃ-
গীষ্মের প্রচ- তাপদায়ক গরমের প্রভাব দেশজুড়েই পড়েছে। এরই মধ্যে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় মানুষের শরীরে গরম অনুভূত বেশি হচ্ছে। এজন্য জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত রোধে শুকিয়ে গেছে প্রাায় সবগুলো খালবিল, পুকুর, ডোবা, নদী -নালা। পানির অভাবে মরে যাচ্ছে ছোট বড় সকল ধরনের মাছ। পুকুরে পানি না থাকায়, অনেককেই দেখা গেছে বাধ্য হয়ে গোসল না করে দিনকে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে, শুধু তাই নয় ভাত রান্না করার জন্য পানি ব্যাবস্থা করতে গৃহবধূদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
সূর্যের প্রচ- উত্তাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রোদের তেজে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেক মানুষই। নলডগী গ্রামের লোকমান নামের এক রিকশাচালক বলেন, গরমে ঠিকমত রিকশা চালাতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে। আহাদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, গরমে রাতে ঘুমাতে পারছি না।
নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, কাকগুলো একটু পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছে শরীর। রাস্তার কুকুরগুলো অল্প পানিতে শরীর জুড়িয়ে নিচ্ছে। আর নদীর পাড়ে গাছের নিচে বসে অনেকে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলছে রোগীর চাপ। কোথাও কোথাও দু’এক পশলা বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তীব্রতা থেকে রেহাই মেলেনি।
তারই ধারাবাহিকতায় তীব্র গরম আর কাঠফাটা রোদে লক্ষীপুর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এতে সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। রোদের তেজে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকেই। গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া দেখা দিচ্ছে। অনেকেই আবার একটু স্বস্তি খুঁজে নিতে গাছের ছায়াতলে কিংবা শীতল কোনো স্থানে আশ্রয় নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্যের প্রচ- উত্তাপে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন লক্ষীপুর জেলার জনসাধারণ। গরমের তীব্রতা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই দেখা গেছে ছাতা হাতে চলাফেরা করতে। রাস্তার পাশের পানীয় ও শরবতের দোকানগুলোতে অনেক মানুষের ভিড় দেখা যায়। জেলার দালাল বাজার এলাকার স্কুল শিক্ষিকা সাদিয়া রহমান বলেন, গতকাল দিনে এবং রাতে ছিল প্রচন্ড- গরম। এটা সহ্য করার মতো না। আজকে গরম আরো বেশি।
জেলার বিভিন্ন থানার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, ক্লিনিকগুলোতে প্রতিনিয়ত ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগেীর সংখ্যা বাড়ছে, আক্রান্ত রোগি প্রতিনিয়ত চিকিৎসার জন্য আসছে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার কামালুর রহিম সমর ভোরের ডাকের সংবাদদাতাকে জানান। গরমের কারণে বেড়েছে রোগীর চাপ, প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া, জ্বও, সর্দি, কাশি, ,পাতলা পায়খানা, ডিএড্রেসন, হওয়াসহ রোগীর সংখ্যা বাড়ায় আমাদের সেবা দিতে হীমসিম খেতে হচ্ছে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদেরকে দ্রুত লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছি, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর আসছে ১২ জন।
লক্ষীপুর জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল গফফার ভোরের ডাকের সংবাদদাতাকে জানান, প্রচ- গরমের কারণে বেড়েছে রোগীর চাপ , রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে জেলার সকল সরকারী বেসরকারী হাসফাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান ।
উল্লেখ্য, প্রচন্ড – তাপদাহে চন্দ্রগঞ্জসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করছে।