দিগন্তের আলো ডেস্ক :
চলতি বছর জেলায় ধানের বাম্পার ফলন হলেও চলমান সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বহু কৃষক। আর্থিক ও শ্রমিক সংকটের কারণে মাঠের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না তারা। এমতাবস্থায় বিপদগ্রস্ত এসব কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। তারা বিনাপারিশ্রমিকে ক্ষেতের পাকা ধান কেটে মাড়াই করে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে চন্দ্রগঞ্জ থানার হাজীরপাড়া ও দিঘুলীতে ফসলি মাঠে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের। তারা ওই গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মো. মোহন ও কামালের ৬০ শতাংশ জমির পাকা ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছিলেন।
এতে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক এম আলাউদ্দিন এবং হাজিরপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক জসীম উদ্দীনের নেতৃত্বে অন্তত ১২ জন নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
উপকারভোগী কৃষক মো. মোহন বলেন, ‘টাকা এবং শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান গুলো ঘরে তোলা নিয়ে আমি বিপদে পড়ি। পরে একাই ধান কাটা শুরু করি। এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা খবর পেয়ে আমাকে সহযোগিতা করেন। তারা নিজে থেকে এসেই ধান কেটে এবং মাড়াই করে আমার ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন। এতে আমার উপকার হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই মানবিক কাজটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।’
চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক এম আলাউদ্দিন বলেন, চলমান লকডাউনে পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে বিপদে পড়া কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। আমাদের এ কর্মসূচি চন্দ্রগঞ্জ থানার এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে চলমান রয়েছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা গত বছরও টানা ১৫ দিন বিনাপারিশ্রমিকে স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করেছি।
হাজিরপাড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক জসীম উদ্দীন বলেন জেলা ও চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. বেলাল হোসেন খান বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৩৫ হাজার ৭৮৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবছর প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে একদিনের কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বাস্তবতা হলো- ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ঝুঁকি থেকেই যায় ’
সর্বাত্মক লকডাউনে বিপদে পড়া কৃষকদের এভাবেই সহযোগিতা করে যাচ্ছে লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।