দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর একটি রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি ক্রমে ঘোলাটে হচ্ছে। সর্বশেষ জান্নাত আরা ঝর্ণার তিনটি ডায়েরি ফাঁসের পর তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
এ পরিস্থিতিতে মামুনুলের বিষয়টি নিয়ে তদন্তকারীরা তাঁর কথিত স্ত্রীকে খুঁজছেন। ঝর্ণার বড় ছেলে আব্দুর রহমানও তাঁর মাকে খুঁজে পাচ্ছেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় ঝর্ণা এবং তাঁর ছেলের নিরাপত্তার বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত ঝর্ণার হদিস পায়নি পুলিশ। এদিকে খোঁজ নিতে গিয়ে আরেক নারীর সঙ্গেও মামুনুলের যোগাযোগের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ওই নারীর বিষয়েও তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।
গত শুক্রবার মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচিতি পাওয়া ঝর্ণার ২০০ পৃষ্ঠার তিনটি ডায়েরি উদ্ধার হলে সেটি তাঁর মায়ের বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ছেলে আব্দুর রহমান। ঝর্ণার ডায়েরিতে লেখা, ‘আমাকে বিয়ে না করেই গ্রিন রোডের একটি বাসায় রাখেন মামুনুল হক। আমাকে খরচের টাকাও দিতেন। কিন্তু বিয়ে করে স্ত্রী বানাননি।’ মামুনুল হক প্রায় দুই বছর আগে বিয়ের কথা বললেও ডায়েরির বর্ণনা মতে কয়েক মাস আগেও তাঁদের বিয়ে হয়নি।
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি সূত্র জানায়, মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ডের জেরে নাশকতার ঘটনা ঘটায় ব্যক্তিগত বিষয়টিকেও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। গণমাধ্যমে কথিত সেই স্ত্রীর ডায়েরি প্রকাশের পর তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ কারণে ঝর্ণার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছে পুলিশ। তবে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ঝর্ণার অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা। আর মায়ের সন্ধান চেয়ে আব্দুর রহমান একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন বলেও জানান। ডিবি পুলিশ ঝর্ণার সেই ডায়েরি উদ্ধার করে পর্যালোচনা করছে।
সূত্র মতে, মামুনুল-ঝর্ণার ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে আরেক নারীর ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে মামুনুলের। তাঁর সঙ্গে মামুনুলের সম্পর্ক যাচাই করা হচ্ছে। এসব ঘটনা ফৌজদারি আপরাধের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ত হলে তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।
গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয় নাশকতার ঘটনায় দুই মামলায় মামুনুল এজাহারনামীয় আসামি। এ ছাড়া ঢাকায় গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রীয় মসজিদে নাশকতার ঘটনায় পল্টন থানার দুই মামলার আসামি তিনি।
জানতে চাইলে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সোনারগাঁর ঘটনায় সোনারগাঁয় মামলা হয়েছে। আমরা নাশকতার ব্যাপারে তদন্ত করছি। আসামিদের গ্রেপ্তারেও আমাদের তদন্ত চলছে।’