লক্ষীপুরে ইটভাটায় জ্বলছে কাঠ

রায়পুর লক্ষ্মীপুর সদর

সাহাদাত হোসেন (দিপু) ঃ-

লক্ষীপুরে ইটভাটায় জ্বলছে কাঠ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই লক্ষীপুর জেলার বেশির ভাগ ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি। আর ইট পোড়াতে কয়লার পরিবর্তে নির্বিচারে জ্বলছে কাঠ ও যানবাহনের পুরনো টায়ার। ইট ভাটাগুলোর কোনোটিতেই ১২০ ফুট উঁচু নির্দিষ্ট উচ্চতার পাকা চিমনি নেই। ফলে কম উচ্চতার এসব চিমনি দিয়ে বের হয়ে কাঠ ও টায়ারের ধোঁয়া মিশে যাচ্ছে বাতাসে।

পরিবেশবাদী, শিক্ষক ও চিকিৎকসদের মতে, এতে পরিবেশ দূষিত হয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিভিন্ন রকমের রোগ আক্রান্তের হার বাড়ছে। জেলার বেশির ভাগ ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব চিমনির পরিবর্তে এখনো ‘ড্রাম চিমনি’ ব্যবহার করা হচ্ছে। চারিদিকে স্তূপ করে রাখা হয়েছে কাঠ। এসব কাঠ ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করছেন। আর শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে শিশুরা। ভাটায় ট্রাক্টর (পাওয়ার ট্রলি) দিয়ে জমি থেকে মাটি আনা হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে শিশু-বৃদ্ধ, ও স্থানীয়দের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ ইটভাটা কৃষি জমি ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে। এছাড়া, কোনো ইটভাটাতেই ১২০ ফুট উচ্চতার পাকা চিমনি দেখা যায় না।

কৃষকদের অনেকেই জানান ‘ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) চলে যায় ইটভাটায়। সেই মাটি পুড়িয়ে ভাটা মালিকরা তৈরি করছেন ইট। এতে ফসলি জমির উৎপাদন কমে যাচ্ছে। আগের মতো করে ফসল না হওয়ায় কৃষকদেরও কৃষি কাজে অনীহা চলে এসেছে বলে তারা বলেন। এজন্য প্রতিবছরই কমছে ফসলি জমির পরিমাণ। তা ছাড়া ‘ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে ফুসফুসের প্রদাহ, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিসহ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষতি হয় বেশি।’

লক্ষীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বলেন দ্রুত অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ দিগন্তের আলোকে বলেন ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, জনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। ইটভাটায় থাকতে হবে ন্যূনতম ১২০ ফুট উচ্চতার পাকা চিমনি। এছাড়া, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে কয়লা। কোনোভাবেই কাঠ কিংবা টায়ার পোড়ানো যাবে না। তিনি আরও বলেন যে সকল ইটভাটার মালিকেরা আইন অমান্য করে ইটভাটা পরিচালনা করছেন ঐ সকল ইটভাটা ও মালিকদের বিরুদ্ধে খুব শিঘ্রই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *