প্রেমিকের ‘আত্মহত্যা’র পর চলে গেলেন প্রেমিকাও

অপরাদ

দিগন্তের আলো ডেস্ক :-

কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রেমিকাকে ‘গুড বাই’ জানিয়ে তার ওড়না নিয়ে চলে আসেন প্রেমিক সুমন হালদার (২৫)। পরে সেই ওড়না গাছে বেধে তাতে ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন প্রেমিক সুমন। তবে তার পরিবারের অভিযোগ কৌশলে সুমনকে হত্যা করছে মিনার পরিবার। এদিকে, এ ঘটনার তিন দিনের মাথায় বুধবার রাতে উদ্ধার হয় প্রেমিকা মিনা আক্তারের (১৯) মরদেহ।

ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামারি গ্রামে। সুমন হালদার গ্রামের কৃষ্ণপদ বিশ্বাসের ছেলে। মিনা আক্তার একই উপজেলার রাজনগর গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কাতলামারী বাজারে প্রসাধনীর দোকান রয়েছে সুমন বিশ্বাসের। দোকানে আসা যাওয়ার সূত্র ধরে কলেজছাত্রী মিনা আক্তারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পেরে মিনার পরিবার এই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে তাকে চাপ দিতে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার রাতে দোকান বন্ধ করে মিনার সঙ্গে দেখা করতে যান সুমন। কথা বলার এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুমন প্রেমিকাকে ‘গুড বাই’ বলে তার ওড়না নিয়ে চলে আসেন। পরে রাতেই ওই ওড়না গলায় পেচিয়ে বাড়ির পাশে একটি গাছে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সুমন। বিষয়টি জানতে পেরে মিনা তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুমনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। সুমনের মৃত্যুর পর থেকে বিষন্ন দেখায় মিনাকে। এরপর বুধবার রাতে নিজ ঘরের আড়ায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় মিনার মরদেহ। পরিবারের সদস্যরা জানান, মিনা আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, মুসলিম পরিবারের মেয়ে মিনা আক্তার হিন্দু ধর্মাবলম্বী সুমন কুমারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় মেয়ের পরিবার ক্ষুব্ধ ছিল।

এদিকে সুমনকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

সুমন হালদারের বাবা কৃষ্ণ কুমার হালদার জানান, গত সোমবার রাত ১১ টার দিকে দোকান থেকে ফিরে ফোনকল পেয়ে তার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায। পরে ভোর ৪ টার দিকে পাশের বাড়ির লোকজনের কাছে জানতে পারি সুমন মিনাদের বাড়ির পিছনের বাগানে পড়ে আছে। তাকে টেনে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আনা হয়েছে। সুমনের গলায় কোনো ওড়না বা ফাঁস লাগানো দড়ি ছিল না। মামলা করার জন্য থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

মিনা আক্তারের মা সুমাইয়া বেগম জানান, তার মেয়ের সাথে সুমনের সম্পর্কের কথা তারা জানতো না। পরে বিষয়টি জেনে মেয়েকে শাসন করেন। এরপর গত সোমবার রাতে সুমন তাদের বাড়ির পিছনের বাগানে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে তার মেয়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়ে চুপচাপ হয়ে যায়। বুধবার তাকে জোর করে কিছু খাওয়ানো হয। রাতে তার মেয়ে তাদের কাছেই ঘুমিয়ে ছিল। পরে ভোরের দিকে কোন এক সময় উঠে পাশের ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে মিনা। তিনি অভিযোগ করেন, সুমনের মৃত্যুর পর তার বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সুমনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মিনার লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে ঘটনা বিশ্লেষণ করে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *