সাহাদাত হোসেন দিপু :
হঠাৎ বৃষ্টির কারণে লক্ষীপুরে পান চাষের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও নানা প্রতিকূলতার মাধ্যমে কৃষকরা তা কাটিয়ে উঠেছে। তবে পানের বরজের জন্য জায়গা, উপকরণ সংকটের কারণে আগের মতো পান চাষে তেমন সুবিধা করতে পারছে না কৃষকেরা। এছাড়া স্থানীয়দের বিপুল চাহিদার কারণে বাজারে পানের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। যে কারণে বাড়ির আনাচে কানাছে পরিত্যক্ত জায়গায় পান চাষ করার জন্য কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। পানের উৎপাদনও বেড়েছে দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে প্রচুর পান বিক্রি হয়েছে বলে পান বেপারিরা জানান।
পুকুরদিয়া গ্রামের পানচাষি নজু মিয়া জানায়, পান চাষে অন্যান্য তরিতরকারি চেয়ে অধিকতর যতœ করতে হয়।
তিনি জানান, পান চাষ ফুল চাষের মতো। যত যতœ করবেন তত আয় হবে। চলতি মৌসুমে পানের বরজ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। পাশাপাশি পানের চারা বিক্রি করে পেয়েছে আরো ৪০ হাজার টাকা।
রায়পুর হায়দারগন্জের পানচাষি নজু মিয়া, মির আহমদ ও অলি বকসু জানায়, আগে পান চাষে এত কদর ছিল না। যেহেতু পান চাষে উপকরণ সংকট সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে অনেকেই পান চাষ করেনি। বর্তমানে পান চাষিরা ধারাবাহিক লাভবান হওয়ার সুবাদে পান চাষে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাড়ে ১শ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাছান ইমামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, লক্ষীপুরের যেসব এলাকায় পান উৎপাদন হয়ে থাকে এসব পানের একাংশ রপ্তানিযোগ্য।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত না হলে প্রতি অর্থ বছরে লক্ষীপুর থেকে ২০ কোটি টাকার পান উৎপাদন সম্ভব। তিনি বলেন, এলাকার অধিকাংশ পানচাষি কৃষক পরিত্যক্ত এলাকায় পুঁজি বিনিয়োগ করে পান চাষ করে আসছে। এসব চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হলে পান চাষ করে দরিদ্র পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আসার সম্ভাবনা ছিল।
রায়পুর ও রামগতির পাইকারি পান ব্যবসায়ী নজু মিয়া ও ছিদ্দিক আহমদের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, তারা বলেন, এখানে উন্নতমানের রপ্তানিযোগ্য পান উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে পান রপ্তানি খাতে সরকার প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।