দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে আটকে পড়া প্রায় ৪০০ বাংলাদেশী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরছেন। শুধু কাতার নয়, ইতালি, লন্ডন, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া প্রবাসীরা হতাশা নিয়ে দেশে ফিরছেন।
বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গতকাল শুক্রবার নয়া দিগন্তকে জানান, শুক্রবার ঢাকার সময় বিকেল সোয়া ৫টায় ৩৮৩ জন যাত্রী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এযারলাইন্সের (বোয়িং-৭৭৭-৩০০) ফ্ল¬াইটটি কাতারের রাজধানী দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সেটি রাত সোয়া ১০টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
এর আগে বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার ২৭৬ জন যাত্রী নিয়ে ইতালির রাজধানী রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। সেখান থেকে দোহা হয়ে আটকে পড়া ৩৮৩ জন বাংলাদেশীকে নিয়ে দেশে ফেরার সময় নির্ধারণ করা রয়েছে বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
একইভাবে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা থেকে বিমানের অপর একটি চার্টার্ড ফ্লাইট ১৪০ জন যাত্রী নিয়ে দুবাই যায়। সেখান থেকে ফ্লাইটটি মিসরে যায়। ফিরতি ফ্লাইটে মিসর থেকে ৪১ জন যাত্রী নিয়ে দুবাই হয়ে রাতে ফেরার কথা রয়েছে। গতকাল শাহজালাল বিমানবন্দরে একজন কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, কাতারের ফ্লাইটটি রাত সোয়া ১০টায় এবং রিয়াদ থেকে শনিবার রাত আড়াইটায় বিমানের অপর একটি ফ্লাইট ঢাকায় নামার কথা রয়েছে। এই মুহূর্তে বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটই বেশি চলাচল করছে।
গতকাল বিমানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে জানান, শুধু কাতার নয়, মালদ্বীপের মালে, দুবাই, মালয়েশিয়া, লন্ডন, ইতালি, বাহরাইন, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের অনেকেই চার্টার্ড ফ্লাইটে অতিরিক্ত দামে টিকিট কিনে দেশে ফিরছেন।
তার মতে, আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হলে তখন প্রবাসীদের দেশে ফেরত আসার হার আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
এ দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার খুদে বার্তায় জানিয়েছেন, ৩ জুলাই সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ৪১৫ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন।
বিমানবন্দরে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা জানান, বিদেশ থেকে যারাই দেশে ফিরছেন তারা সবাই কোভিড-১৯ সনদ নিয়েই ফিরছেন, যার কারণে তাদের সবাইকে বিমানবন্দর থেকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। তবে দেশে ফেরাদের মধ্যে বেশির ভাগই হতাশার ভুগছেন জানিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে হতাশা ছাড়া দেশে ফেরার আর কী কারণ থাকতে পারে?
গতকাল শুক্রবার রাতে আল রাবেতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ও বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসিচব-১ মো: আবুল বাশার প্রবাসীদের দেশে ফেরত আসা প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনা ক্রান্তিকালে বিদেশে অনেক শ্রমিক কর্মবিমুখ হয়ে পড়েছিলেন। এরমধ্যে অনেকেই বেতনভাতা ঠিক মতো পায়নি। বিড়ম্বনার শিকার এসব শ্রমিকরা অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়েই দেশে ফিরছে বলে আমি মনে করি। তবে আমি এ-ও মনে করি এই ক্রান্তিকাল তারা কাটিয়ে উঠবে যদি সরকারের তরফ থেকে প্রণোদনা বৃদ্ধি করা হয়।