লক্ষীপুর কেউ মানছে না নিয়ম দূরত্ববিধি উপেক্ষা করেই চলছে গাড়ি ও মানুষ।

লক্ষ্মীপুর

সাহাদাত হোসেন দিপু ঃ-

রোববার থেকে শর্ত সাপেক্ষে সারাদেশে লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। লক্ষীপুর লকডাউন তুলে নেওয়ার সাথে সাথে মানুষের ভিড় বেড়েছে। আর পরিবহনে এবং ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ইজিবাইক চলাচল বেড়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

এদিন বাইরে চলাচলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে যেসব নির্দেশনা দিয়েছে সরকার, সেগুলো না মেনেই মানুষের চলাচল লক্ষ্য করা গেছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশায় সাধারণ সময়ে চালকসহ ৬ জন চলাচল করত; গতকালও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। রিকশায় দুই থেকে তিনজন যাত্রী এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশায়ও গাদাগাদি করে চলাচল করতে দেখা গেছে।

রাস্তাঘাট, ফুটপাত, কাঁচাবাজার, বিভিন্ন দোকানপাটেও কর্মব্যস্ত লক্ষীপুর বাসীকে খুবই কাছাকাছি থেকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এসব স্থানে কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস পরেছেন। আবার অনেকে এসবের কোনো তোয়াক্কাই করছেন না।

রোববার জেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজারে সিএনজি চালকসহ ছিলেন ৬ জন। চালকের মুখে মাস্ক ছিল না, তবে যাত্রীদের সবার মুখে মাস্ক ছিল। এ বিষয়ে সিএনজি চালক কামাল হোসেন দিগন্তের আলোকে বলেন, ‘অনেকদিন বেকার । কয়েকদিন হল গাড়ি বের করেছি। যাত্রী বেশি নিয়ে চালানোর চেষ্টা করছি। যাতে ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারি। আর গরমের কারণে মাস্ক পরতে পারছি না।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জন্য ঝুঁকি রয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু জীবিকার প্রয়োজনে আল্লাহর ওপর ভরসা করে পথ চলা শুরু করেছি। আল্লাহ বাঁচায়ে রাখলে বাঁচব, নইলে মারা যাব। এখন এর বাইরে অন্য কিছু ভাবতে পারছি না।’

গাদাগাদি করে কেন গাড়িতে উঠল যাত্রীদের কয়েকজনকে এমন প্রশ্ন করলে তারা বিরক্তি প্রকাশ করে মুখ ঘুরিয়ে নেন। সকালে লক্ষীপুর থেকে রায়পুর, মান্দারী থেকে চন্দ্রগঞ্জ, লক্ষীপুর থেকে রামগতির উদ্দেশে বাছ, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, টেম্পো, ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে।

অনেকদিন পর ড্রাইভার ও হেলপারদের লক্ষীপুর.., লক্ষীপুর …সহ বিভিন্ন স্থানের নামে যাত্রীদের ডাকতে দেখা গেছে। লক্ষীপুর টার্মিনাল ও আশপাশের এলাকার বাসকাউন্টারগুলো খুলতে দেখা গেছে। এসব কাউন্টারের সামনে বেশকিছু বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

জেলার বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে মানুষের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। এ সময় গায়ে গায়ে লেগে মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া চা বিক্রেতা, ডাব বিক্রেতা, ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানপাটের পসরা শনিবারের তুলনায় অনেকাংশে বেড়েছে। জেলার মান্দারী, উত্তর তেহমুনি , দালাল বাজার , রায়পুর , চন্দ্রগঞ্জ, কমলনগর, পানপাড়া, হায়দারগঞ্জ, এলাকার সব ধরনের দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে।

সরকারিভাবে গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধানের কথা বলা হলেও তা মানছে না কোন যানবাহনের চালক কিংবা হেলপার প্রত্যেক সিটে যাত্রী এবং কয়েকজনকে দাঁড়িয়েও চলাচল করতে দেখা গেছে। লক্ষীপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা আরিফুর রহমান দিগন্তের আলোকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকার অফিস খুলেছে। যথানিয়মে অফিস শুরু করেছি। যতদিন সুস্থ থাকি নিয়মিত অফিস করে যাব। স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ হিসেবে শুধু মাস্ক পরছেন এবং এ বিপদ থেকে বাঁচতে বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছেন।

জেলার ঝুমুরের মোড়ে ৪-৫ জন চালককে দাঁড়িয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তাদের একজন জানান, প্রায় দুই মাস বেকার থাকার পর বাধ্য হয়েই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *