সাহাদাত হোসেন দিপু ঃ-
লক্ষীপুরে কেউ মানছেন না লকডাউন। দিনে জমজমাট আর রাতে পাড়া-মহল্লায় চলছে আড্ডা। বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। আর করোনার উপর্সগ নিয়ে লক্ষীপুরে মৃত্যু হয়েছে কয়েক জনের। ক্রমেই দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে লক্ষীপুরবাসী।
পুরো জেলাকে লকডাউন করা হলেও মানতে চাচ্ছে না সাধারণ জনগণ। দিনের বেলায় রাস্তায় মানুষের সমাগম চোখে পড়ে, মনে হয় না জেলায় লকডাউন চলছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে লক্ষীপুর জেলা প্রশাসন থেকে গত ১৩ এপ্রিল লক্ষীপুর জেলা লোকডাউন ঘোষণা করে। মূলত এরপর থেকেই ব্যস্ততম লক্ষীপুর জেলার চিরচেনা রূপ ক্রমশ বদলাতে থাকে। সন্ধ্যা না নামতেই ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয় লক্ষীপুর । শহরের প্রধান ব্যস্ততম এলাকা, ও বাজারগুলো যেখানে সব সময় টইটম্বুর থাকতো অটোরিক্সা, সিএনজি, রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন এখন সেখানে কেবলই সুনশান নিরবতা। মানুষ থাকছে ঘরবন্দি। সন্ধ্যা নামার পর থেকেই সব বন্ধ। বন্ধ হয়ে গেছে মানুষের কাজকর্মও।
ফলে রাতের লক্ষীপুর এতটাই নীরব হয়ে গেছে, যেন এই শহরে কোনো মানুষ নেই৷
মানুষ আছে, কোনো উৎসব নেই, খাবার আছে, সে খাবারে তৃপ্তি নেই। প্রতিবেশী আছে, যোগাযোগ নেই। পাশাপাশি বসবাস হলেও একে অপরের সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হচ্ছে।
এদিকে লক্ষীপুরে লকডাউনের এক থেকে দুদিন না যেতেই শহরের মার্কেট কিংবা বিপণিবিতানগুলো বন্ধ থাকলেও, অন্যান্য সকল দোকানপাট হাট-বাজার খুলতে শুরু করেছে। ফলে আগের মতো জৌলুশ না থাকলেও বেলা গড়াবার সাথে সাথেই জমজমাট হয়ে উঠে শহর। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মানুষ অবাধে রাস্তায় বিচরণ করছে। প্রশাসনের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুগুলি দেখিয়ে প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক, মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে রাস্তায়। চলছে রিক্সা, অটো, সিএনজি, ছোট ছোট মাইক্রো ও মিনি ট্রাক। এদেরকে আটকিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা, পুলিশের জনসচেতনতায় মাইকিং কিংবা সেনাবাহিনীর টহলও দমাতে পারছে না তাদের। দলবেধে মানুষ বাজার করছে, কেনাকাটা করছে, রাস্তায় চলাফেরা করছে। ৪ টার পর দোকান-পাট বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও বন্ধ হচ্ছে না। তবে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শহরজুড়ে নেমে আসে ভুতুড়ে অন্ধকার, সুনশান নীরবতা। সব কিছু বন্ধ থাকলেও পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায়-মহল্লায় চলে জম্পেস আড্ডা। মনে হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ আড্ডা দেয়ার সময়ই এই লকডাউনের সময়।
গেল এক মাসে বাংলাদেশের করোনা রোগের ডেঞ্জার জেলা হিসেবে খ্যাত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ক্রমান্বয়ে লক্ষীপুরে লোক আসতেছে । এসব লোক লকডাউন অবস্থায় অবৈধভাবে চোরাই পথে লক্ষীপুর প্রবেশ করেছে। কোনোভাবেই এদেরকে ঠেকানো যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে, প্রশাসন যতোই কঠোর হচ্ছে লকডাউনও ততো দুর্বল হচ্ছে।