কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি পকেট ভারীই করলেও” লক্ষীপুর অনেকেই দাঁড়িয়েছেন জনগণের পাশে “

লক্ষ্মীপুর

সাহাদাত হোসেন দিপু ঃ-
এই পৃথিবীতে দুই কারণে মানুষ সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও সমালোচিত হয়, ভালো কাজ ও খারাপ কাজের মধ্যে। ভালো মন্দ একে অপরের পরিপূরক। জন প্রতিনিধিদের মধ্যে যেমন কিছু অসাধু ব্যাক্তি আছে, ঠিক তেমনি ভালো’র সংখ্যাটাও নিতান্তই কম নয়।
সারাদেশের নেয় লক্ষীপুরেও অনেক দায়িত্বশীল সাংগঠনিক ব্যক্তিকে মাঠে তেমন একটা দেখা না মিললেও, কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জন-প্রতিনিধিদেরকে দেখা গেছে রাতদিন করোনা প্রতিরোধে নিরলস ভাবে জনসাধারণের পাশে থেকে তাদেরকে সহায়তা করতে।
করোনাভাইরাসের তান্ডবে যখন পুরো পৃথিবী কোনঠাসা হয়ে পড়ছে, প্রতিদিন সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের বলি হচ্ছে হাজারো মানুষ, প্রতিনিয়ত মানুষ উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র গুলো যখন করোনাভাইরাসের আগ্রাসী ছোবলে অনেকটাই দিশেহারা, রীতিমতন হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের করোনা নামক এই মরন ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে।
বাংলাদেশও দিনদিন করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, করোনা প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সরকারি, বেসরকারি, সহ দেশের সকল প্রতিষ্ঠান, এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দেশের নিম্ন ও মধ্যেবিত্ত আয়ের মানুষজন।

দেশের এই ক্লান্তি লগ্নে জনগনের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা ৭৪ হাজার কোটি টাকার অধিক প্রনোধন প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো দেশের এই অন্তিম সময়েও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও কিছু সংখ্যক জনপ্রতিনিধি সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ালেও কিছু মানুষরুপি অমানুষ অর্থলোভী অসাধু জনপ্রতিনিধি সাধারণ মানুষের নামে নিজেদের পকেট ভারীই করে চলেছেন।

অপরদিকে লক্ষীপুর জেলার জনপ্রতিনিধিদের চিত্র কিছুটা ভিন্ন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু জনপ্রতিনিধিকে সরকারি এান আত্মসাৎের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। লক্ষীপুরে এখন পর্যন্ত কারোর বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ অভিযোগ না উঠলেও, আওয়ামীলীগের অনেক প্রভাবশালী নেতাকে সাধারণ মানুষের পাশে দেখা যায় নি।

লক্ষীপুর সদর উপজেলার কিছু সংখ্যক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দেখা গেছে জনসাধারণের পাশে দাড়াতে। অনেকেই দেখা গেছে গভীর রাতে ত্রান সামগ্রী নিজে মাথায় করে মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দিতে, আবার অনেকেই মোবাইল ফোনে কল পেয়ে বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে ।

সরজমিনে লক্ষীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে দিনরাত জনসাধারণের জন্য কাজ করতে দেখা গেছে লক্ষীপুর জেলা পরিষদের সদস্য বদরুল আলম শ্যামল, লক্ষীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক বায়োজীদ ভূইঁয়া, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, নুরুল ইসলাম বাবুল, মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিজানুর রহিম, দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির রিপন, চরশাহী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গুলজার হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সন্মানিত সদস্য সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক কাজী বাবলু, চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবু তালেব, সাবেক থানা ছাত্রলীগের সদস্য আল আমিন, কাজী নিজাম, সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম মিন্টু মেম্বার, (মান্দারী) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ( মান্দারী) আজমির হোসেন ( হাজীরপাড়া), মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন (দিঘুলী) , সাইফুল ইসলাম স্বপন (দিঘুলী)। সহ অনেকেই।

মাহবুবুর রহমান রাজু সভাপতি মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, মিজানুর রহমান সভাপতি উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, আব্দুল ওয়াদুদ লিঠন সভাপতি দিঘুলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, মাসুদ প্রভাষক সাধারণ সম্পাদক মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, কবির খাঁন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, আল মাহমুদ রাশেদ যুগ্ম আহবায়ক মান্দারী ইউনিয়ন যুবলীগ, নিজাম উদ্দীন যুগ্ম আহবায়ক দিঘুলী ইউনিয়ন যুবলীগ, সহ আরও অনেকেই। এই সকল জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে বেশিরভাগ সময় রাতদিন নিম্ন ও অসহায় মানুষের জন্য কাজ করছে বলে সাধারণ মানুষজন জানান।

এদের মধ্যে কয়েকজন জন-প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি দিগন্তের আলোকে বলেন, আমরা অনেকেই ইউনিয়ন ভিত্তিক ১০ জনের একটি টিম, চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে সবসময় প্রস্তুত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আজ রোববার পর্যন্ত সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কয়েক হাজার পরিবারকে বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তারা। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে এই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। জনগণের দুর্দশার কথা চিন্তা করে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে একটি হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করেছি। এর মধ্যে অনেকে সামনে এসে ত্রাণ নিতে অপারগতা জানালে তার দেওয়া গোপন স্থানে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। এই সার্ভিস শুধু দিনেই নয় রাতেও চলছে বলে তারা বলেন।

লক্ষীপুর সদর উপজেলা ২১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় কয়েক লক্ষ লোকের বসবাস। এর মধ্যে অনেকেই দিনমজুর ও হতদরিদ্র। করোনাভাইরাস মহামারিতে দোকানপাট বন্ধ থাকায় জনজীবন অনেকটা বিপন্ন।

এই ছাড়াও তারা প্রতিদিনই ছুটে যাচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সবাই ব্যস্ত পরের উপকারে। কখনও প্রখর রোদ কিংবা গভীর রাতে এই জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ক্লান্তিহীন ছুটে চলা। লক্ষীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তাদের এমন কাজ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *