সাহাদাত হোসেন (দিপু) ঃ-
ছাগল দিয়ে যেমন হালচাষ হয় না তেমনি কোন খোনার দিয়ে ডাক্তারী চিকিৎসা হয় না, মানুষ আল্লাহ ও নবীর পরে যদি কারোর উপর ভরসা রাখে সেই হলো চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ব্যাক্তিবর্গের উপর কারণ একজন ভালো চিকিৎসক পারে মানুষকে (রুগী) জীবন দিতে আবার একজন খারাপ ডাক্তার (ভূয়া) পারে মানুষকে (রুগী) ভুল চিকিৎসা দিয়ে মারতে। তার উপরে যদি কোন খোনার কবিরাজ কোনো রুগীকে ডাক্তারী চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাহলে ঐ রুগীর ভালো হওয়ার পরিবর্তে খারাপ হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি থাকে।
ঠিক তেমনি লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার মান্দারী বাজারে মাওলানা মহিবউল্যা নামের একজন খোনারের ভূল চিকিৎসায় , আয়েশা নামের ৩ মাসের একটি বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়েছে ।
আয়েশা হাজিরপাড়া ইউনিয়নের মিয়াবাড়ির আমির হোসেনের মেয়ে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে আয়েশার বাবা আমির হোসেন বলেন, চলতি মাসের ২১ শে জানুয়ারি হঠাৎ আমার বাচ্চা অতিরিক্ত ভৌমী করতে থাকে, তখন আমি ও আমার স্ত্রী মান্দারী মাওলানা মহিবউল্যা খোনারের কাছে নিয়ে আসি, এবং কি বাচ্চার অসুস্থার কথা বলি আমার কথা শুনে তখন তিনি আমার ৩ মাসের বাচ্চা আয়েশাকে তরল জাতীয় এ্যাটরাক্স নামের একটি কৃমিনাশক (শিশি) ওষুধ দিয়ে বলেন, ২ চামচ করে প্রতিদিন খাওয়ানোর জন্য এবং বাচ্চাকে যেনো মায়ের বুকের দুধ না খাওয়াতে । বুকের দুধে নাকি আলগা বাতাস লাগছে আর এই সময় মায়ের বুকের দুধ পান করলে বাচ্চার অবস্থা আরও খারাপ হবে, এবং তিনি আরও বলেন বুকের দুধ না খাইয়ে বাজার থেকে দুধ কিনে খাওয়ানোর জন্য, পরে আমরা বাচ্চাকে নিয়ে বাসায় চলে আসি এবং ওনার কথা অনুযায়ী ২ চামচ কৃমির ওষুধ আমার মেয়ে আয়েশাকে খাওয়াই। খাওয়ানোর পরে আয়েশা আরও বেশি করে ভৌমী করে এবং অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ২২ তারিখ রাতে ওনাকে পোন দিয়ে বাচ্চার অবস্থার কথা বলি, তখন খোনার মহিবউল্যা বলেন বাচ্চাকে কৃমির ওষুধ আরও এক চামচ করে বাড়তি খাওয়ানোর জন্য খোনারের কথা অনুযায়ী আমার মেয়ে আয়েশাকে আরও এক চামচ মোট ৩ চামচ ওষুধ দিয় । কিন্তু আমার মেয়ের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাওয়াতে এক পর্যায়ে আয়েশাকে হাসপাতাল ভর্তি করি গত দুইদিন ডাক্তারের চিকিৎসার পর এখন অবস্থার কিছুটা ভালোর দিকে আছে। এবং ঐ খোনারের ভূল চিকিৎসা কারণে আমার মেয়ে আয়েশার এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানান ডাক্তার তাই আমি আজকে রবিবার ঐ খোনারের কাছে আসি এবং কেন উনি না জেনে ভূল চিকিৎসা দিয়ে আমার মেয়েকে মারতে চাইছে তা জিজ্ঞেস করি। তিনি আরও বলেন আমি চাই আমার শিশুর মতো কেউ যেন এ-ই খোনারের ভূল চিকিৎসার স্বীকার না হয়।
এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত খোনার মহিবউল্যা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি না জেনে অনেক বড়ো ভূল করেছ ভবিষ্যতে আমি খোনারি লাইনের চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোন চিকিৎসা দেবো না, এই ছাড়াও তিনি বলেন আমি ক্ষতি পূরণ যাবত ৯০০ টাকা শিশু আয়েশার বাবা আমির হোসেনকে দিয়েছি এবং নিজের ভূল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি।
স্থানীয়রা জানান মাওলানা মহিবউল্যা খোনার, মোয়াজ্জেম, কাজী, ডাক্তার, এই সবকিছুই তিনি করেন।
লক্ষীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান আরমান শাকিল বলেন ক্রমাণ্যয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।