দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
১৩০০ টাকার গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়
টানা বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে আকস্মিক বন্যায় লক্ষীপুরে প্রায় ৮ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বাসস্থান, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।
পুরো জেলার প্রায় সব সড়ক পানির নিচে। পুকুর-দিঘী থেকে শুরু করে মাছের ঘের- সব কিছুই প্লাবিত হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ এখন অবর্ণনীয়।
অসহায় অধিকাংশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে উঁচু দালান ও আশ্রয় কেন্দ্রে। বন্যাকবলিত এ জেলায় এক সপ্তাহ ধরে সিলিন্ডার গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে উপজেলার বন্যার্তদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। অনেক পরিবার গ্যাসের অভাবে রান্না করতে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, সংকটের সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডার ১ হাজার ৪০০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। স্থানীয় দোকানপাটেও তেমন খাদ্যসামগ্রী নেই, থাকলেও দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে, সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এসব বিষয়ে তদারকিসহ এ উপজেলাকে দ্রুত দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া দরকার।
সোম ও মঙ্গলবার সদর উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অনেকে পানির মধ্যে বসবাস করছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বিপাকে পড়েছে মানুষ।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে শুরু করে কয়েকটি স্থানে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সেখানকার বানভাসি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এদিকে সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে মান্দারী বাজার, চন্দ্রগঞ্জ বাজার, ভবানীগঞ্জ বাজার, জকসিন বাজার, আমিন বাজার, হাজিরপাড়া বাজার, দত্তপাড়া বাজার, শান্তিরহাট বাজার চাঁদখালী বাজার, দালাল বাজার, লক্ষীপুর পৌরসভাসহ ছোট-বড় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
যেসব অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও গ্যাস সিলিন্ডারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধি করছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে বলে লক্ষীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান (ইউএনও) দিগন্তের আলোকে জানিয়েছেন।
আবুল কালাম নামে সদর উপজেলার এক স্কুল শিক্ষক বলেন, এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা নিম্নাঞ্চল হওয়ায় পানিতে মানুষ খুবই কষ্ট পাচ্ছে। পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে নৌকা ও স্পিডবোট দরকার। কিন্তু এখানে তেমন কোনো সহায়তা এখনো আসেনি। মানুষ কষ্টে আছে। বন্যার কারণে লাকড়িও সংগ্রহ করতে পারছে না। অপরদিকে ঘরের ভিটিতে পানি উঠে যাওয়ায় মাটির চুলাতেও রান্না করতে পারছি না। বেড়েছে রান্নার জন্য বেড়েছে গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছেন। বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার।