সাহাদাত হোসেন (দিপু) ঃ-
গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে পদও আছে কিন্তু ডাক্তার নেই। রোগী থাকলেও আবার সেবা নেই। এভাবেই চলছে লক্ষীপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা। বিশেষ করে সদর উপজেলার হাজীরপাড়া ইউনিয়নের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হওয়ায় জনগণকে অসহায় করে তুলছে।
তথ্যমতে, প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জেলার সিভিল সার্জনের অধীনে এসব পরিচালিত হয়। এখানে শিশুসহ সকল জনগোষ্ঠীর মৃত্যুর হার ও রোগাক্রান্তের হার কমানো, গর্ভাবস্থা এবং প্রসব জনিত কারণে মাতৃ স্বাস্থ্য-এর ক্ষতি রোধের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করা হয়।
সদর উপজেলার ৩০ হাজারেরও অধিক ঘনবসতিপূর্ণ ইউনিয়ন হচ্ছে ৯নং হাজীরপাড়া । এই ইউনিয়নের সড়ক ব্যবস্থা কিংবা সামাজিক পরিবেশ পরিস্থিতিতে অনেকটা উন্নতির ছোঁয়া লাগলেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যেনো এখানে ভঙ্গুর।
সরকার ইউনিয়নে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে সুবিধা দিলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা আর সচেতন মানুষের নীরবতায় হাজীরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবাটুকু যেনো কোনমতে টেনে টুনে চলছে। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ইউনিয়নের হাজার হাজার জনগণ। একই সাথে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন চিকিৎসাসেবা নিয়ে নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদেরও।
অভিযোগের বিষয়ে উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হরিপদ মজুমদার বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই থাকিই এবং নিয়মিত সপ্তাহে ৬দিন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।’ তবে মাঝে মধ্যে স্থানীয় , রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ডাকলে কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে সেবা দিয়ে আসি।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়মিত ডাক্তার ও ওষুধ পাওয়া যায় না এমনটাই অভিযোগ করে হাজীরপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আশফাক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ হাজীরপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যদি ঠিক মতো ডাক্তার পাওয়া যেত তাহলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা কিংবা সাধারণ রোগীদের দূর্ভোগ হতোনা।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘করোনা সংকটকালীন সময়ে ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার না থাকায় জনগণ সেবা পাচ্ছে না সেটা সত্য। যেহেতু হাজীরপাড়া একটি জনবহুল এলাকা। স্যাকমো হরিপদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা ফেলে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
তবে হাজীরপাড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ সচেতন মহল মনে করেন এ-ই এলাকার দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসন যদি একটু নজর দেয় তাহলে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হতে পারে।’