দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার জন্য দোয়া করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন পুলিশ কনস্টেবল জুয়েল মিয়া। আর এটিই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। তিন বছরের জন্য তার ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সদস্যদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা জানান জুয়েল মিয়া।
জুয়েল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার বিনাউটি ইউনিয়নের দরুইল গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে। ২০১৮ সালে তিনি পুলিশে যোগ দেন। শুরু থেকেই তিনি বান্দরবান পুলিশে কর্মরত ছিলেন। ২৭ জুলাই তাকে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্সে বদলি করা হয়।
জুয়েল মিয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, সাঈদী একজন আলেম ছিলেন। তার মৃত্যুর পর দোয়া চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। এতে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করান। তিন বছরের জন্য আমার ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেন। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী তদন্ত করেছিলেন। একজন মারা গেছেন, আমি দোয়া চেয়ে কি এমন দোষ করেছি? আমার কি দোষ ছিল ? আমি গরিব পরিবারের সন্তান। অনেক কষ্টে চাকরিটি পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে ১১ দফা দাবিতে পুলিশ লাইন্সে বিক্ষোভ মিছিল করেন পুলিশ সদস্যরা। এসময় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিচার চেয়ে তারা ‘আমার ভাই কবরে, আইজি কেন বাইরে’, ‘আমার ভাই কবরে, কমিশনার কেন বাইরে’, ‘আমার ভাই কবরে, বিসিএস কেন বাইরে’, ‘বিচার চাই বিচার চাই’সহ নানা স্লোগান দেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পুলিশ সদস্যদের অভিযোগ, সারাদেশে হতাহতের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায়ী। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন যে ১১ দফা দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তারা বলেন, ‘পুলিশকে আর পুলিশ বাহিনী রাখে নাই। পুলিশ বাহিনীর পোশাক শেখ হাসিনার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। আমাদের আওয়ামী লীগের গোলাম বানিয়েছে। পুলিশ, পুলিশ ছিল না। পুলিশকে, পুলিশ লীগে পরিণত করা হয়েছে।’
তাদের দাবি, ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রতিটি পরিবারের এক সদস্যকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। সাব ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পিএসসির এবং কনস্টেবল পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অধীনে নিয়োগ দিতে হবে। পুলিশের কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা নির্ধারণসহ স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।