সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুর

 

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মাহাবুবুল করিমের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (১১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে কলেজ ক্যাম্পাসে ১২ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

এর আগে, শনিবার (১০ আগস্ট) কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তালার গায়ে লাগানো সাদা কাগজে লেখা রয়েছে ‘দুর্নীতিবাজের ঠাঁই নাই। সাধারণ শিক্ষার্থী, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ’।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ মিলনায়তনে কলেজের প্রায় ৫০ জন শিক্ষক জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে শিক্ষকদের সঙ্গে অধ্যক্ষের বিভিন্ন সময়ে অসদাচরণের বিষয় তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন অনিয়ম নিয়েও আলোচনা হয়। ওই সভায় কর্মচারীরাও এসে অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-পরবর্তীতে প্রায় পাঁচ দিন পার হলেও অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম কলেজে যায়নি। এতে কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের।

শিক্ষার্থীদের দেওয়া ১২ দফা হলো—অধ্যক্ষের পদত্যাগ। দায়িত্বকালীন তার সব দুর্নীতির হিসাব। কলেজের প্রধান অফিস সহকারীর পদত্যাগ। কলেজ ক্যাম্পাসে সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা। ছাত্র সংসদ গঠন করা। দ্রুত কলেজ হোস্টেল চালু করা। শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ বাসের ব্যবস্থা করা। কলেজের সব শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীবান্ধব ও শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা এবং রাজনৈতিক কূটকৌশলের কারণে কোনো শিক্ষার্থী বিনা অপরাধে গ্রেফতার হলে তাকে মুক্ত করে ক্লাস নিশ্চিত করা। বহিরাগতদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের দ্রুত কলেজ আইডি কার্ড প্রদান ও কলেজ ড্রেস নিশ্চিত করা। কলেজের আহত, নিহত ও কারাবরণকারী শিক্ষার্থীদের পারিবারিক খোঁজ-খবর নেওয়া এবং কলেজ ফান্ড থেকে তাদের পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা। কলেজের অফিসিয়াল পেজ থেকে আনুষ্ঠানিক শোক প্রকাশ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগের গুলিতে নিহত শহীদ কাউছার ওয়াহিদ বিজয়ের নামে একটি লাইব্রেরি অথবা ফটক স্থাপন করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সারাদেশের মতো লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। এ আন্দোলনে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের যেসব শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন, তাদের অনেককে ডেকে এনে কলেজ অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন। এ ছাড়া কলেজ অধ্যক্ষ হয়ে আসার পর থেকে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন। তুচ্ছ ঘটনায় তিনি অসহায় কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করেছেন। কলেজের টাকায় কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে পরবর্তীতে তার বাসায় নিয়ে কাজ করাতেন।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও উপাধ্যক্ষ ড. মো. আজিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার আমাদের জরুরি সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে।

কলেজ অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম বলেন, সরকার পরবিবর্তন হয়েছে। আমাকেও বদলি করে দেবে। এখন অন্য শিক্ষকরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে আমাকে অপমানিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমাকে অপমান করার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না। অনিয়মের ঘটনায় কয়েকজন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছি। এরমধ্যে কয়েকজনকে চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাওয়া কোনো শিক্ষার্থীকে আমি কিছু বলিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *