দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দ্যোগে ঘরে ঘরে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পৌছবে’ এ লক্ষে বিদুতায়নের কাজ শুরু করে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। অথচ স্থানীয় একটি চক্র বিদ্যুৎ সংযোগের নাম করে প্রায় ৩৫০ পরিবারের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের আঁধারমানিক এলাকায়। এ ঘটনায় মোঃ সেলিম মাঝি (৪৫) নামে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। তবে পলাতক রয়েছে প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. শরিফ।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার আঁধারমানিক গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আবু ছালেহ।
গ্রেফতারকৃত মোঃ সেলিম মাঝি তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের একই গ্রামের মো. আবু তাহেরের ছেলে। প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. শরিফ একই ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা।
র্যাব-১১ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতারক চক্রের সদস্য মোঃ সেলিম মাঝি দীর্ঘদিন যাবৎ আঁধারমানিক গ্রাম এলাকায় সকল বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার লক্ষে আঁধারমানিক এলাকায় বিদুতায়নের কাজ শুরু হয়। এ সুযোগে প্রতারক চক্রের শরিফ ও সেলিম মাঝি এলাকায় ঘোষনা দেয়, বিদ্যুৎ এর সকল কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে। প্রতি গৃহে বিদ্যুৎ সরবরাহ তাদের বাইরে কাউকে দিয়ে হবে না। বিষয়টি বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয় সংযোগ প্রত্যাশীদের। তাই বিদ্যুৎ সংযোগের নামে মিটার প্রতি ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা হারে উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয় সেলিম মাঝি।
যেসব গ্রাহক দাবীকৃত ৩ হাজার টাকার কম পরিশোধ করেছে তাদের বাকি টাকা দিতে কেউ বিলম্ব করলে কিংবা অস্বীকার করলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও বিভিন্ন হুমকি ধামকি শুনতে হয়। এতে প্রায় ৩৫০টি পরিবারের কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয় সে। এতে প্রতারণার শিকার হন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রত্যাশী স্থানীয়রা।
এদিকে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও গৃহে মিটার স্থাপন না হওয়ায় গ্রামবাসী লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে জানতে পারে বিদ্যুৎ অফিসে তাদের মিটার ফি বাবদ কোন টাকাই জমা হয়নি। এখানেই শেষ নয়, গ্রামের কতিপয় যুবক মিটার স্থাপনের উদ্দ্যোগ নিলেও প্রতারক সেলিম মাঝির হুমকিধমকিসহ বাধার সম্মুখিন হয়। এমনকি প্রতারনার কাজে বাধা দেয়ায় ওই যুবকদের ফাঁসাতে নিজের স্ত্রী সেতারা বেগমকে বাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করে প্রতারক সেলিম মাঝি।
এমন বাস্তবতায় র্যাব-১১ এর টহলদল সোমবার ওই গ্রামে অভিযান পরিচাল না করেন। এসময় তারা গ্রামের শফিউল্লাহ সর্দার জামে মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বে কাঁচা রাস্তার উপর দৌড়ে পালানোর সময় প্রতারক চক্রের সদস্য মো. সেলিম মাঝিকে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আবু ছালেহ বলেন, গ্রেফতারকৃত প্রতারক সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে টাকা উত্তোলনের বিষয় স্বীকার করে। এ চক্রের প্রধান মো. শরিফ (৩০) বলে জানায় সে। এঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ থানায় তাদের দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক শরিফকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।