লক্ষ্মীপুরে কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে, প্রাইভেট কারে দূরপাল্লার যাত্রীপারাপার

অপরাদ লক্ষ্মীপুর

দিগন্ত ডেস্ক :-
চলমান কঠোর লকডাউন এর এই সময়ে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও লক্ষ্মীপুরে থেমে নেই দূরপাল্লার যাত্রীপারাপার। প্রশাসনের নজরদারি ফাাঁকি দিয়ে প্রতিদিন লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা অভিমুখে চলছে এসব যাত্রীপারাপার। স্থানীয় রেন্ট-এ কার ব্যাবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস এ করে অতিরিক্তি ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের পার করছেন। এক্ষেত্রে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ১৫’শ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। প্রতিটি গাড়ীতে নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত গাদাগাদি করে যাত্রী বোঝাই করা হয়। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ায় যাত্রীদের নিজেদের ভেতেরেই করোনা সংক্রমনের আশংকা থেকে যায়। লক্ষ্মীপুর শহরের বাস টার্মিনাল, উত্তর স্টেশন সহ কয়েকটি স্থান থেকে এসব গাড়ী যাত্রা করে।

সরেজমিনে সোমবার(২৬জুলাই) বিকেলে লক্ষ্মীপুর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের মূল ফটকের ভেতরে ঢকামুখী একাধিক যাত্রী অপেক্ষমান। যাত্রীবাহি বাস সারি সারি পার্কিং অবস্থায়। এসব বাস লকডাউনে বন্ধ রয়েছে। তবে স্টেশনের ভেতরে বাসের ফাঁকে ফাঁকে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস পার্কিংকরে রাখা হয়েছে। এগুলো করেই নিষধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যাত্রীপারাপার করা হয়। অপেক্ষমান যাত্রীদের কাছে ওই গাড়ীগুলোর দালালরা এসে দরদাম করে ভাড়ায় মিললে তারপর তাদেরকে দুই নাম্বার গেইটের দিকে নিয়ে একটি প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাসে ্উঠানো হয়। সেখান থেকেই চুপিসারে ঢাকার দিকে রওয়ানা করা হয়।
এদিন ওইখানে অপেক্ষমান কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা বললে তারা জানায়, দালালের সাথে দরদাম চলছে। একজন জানায়,তিনি ফেরী করে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর আসেন। গন্তব্য তার ঢাকার সায়েদাবাদ। লক্ষ্মীপুর থেকে ওই স্থান পর্যন্ত তার কাছে ১২’শ টাকা চাওয়া হয়েছে।
আরেকজন নারী যাত্রী জানান, তিনি ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকায় যাবেন। তার কাছে ১৫’শ টাকা ভাড়া চাওয়া হয়েছে। এসব যাত্রীরা কিছু কম ভাড়া দিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করানোর চেষ্টায় অপেক্ষমান আছেন।

এই প্রতিবেদক অপেক্ষমান যাত্রীদের সাথে কথা বলতে বলতে ১৫-২০ মিনিটের ভেরে সেখানে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেট কার এসে হাজির হয়। বলতে না বলতে কারটি যাত্রী ও মালামালে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এসময় ওই কারের চালকের সাথে কথা হয়। আকাশ নামের চালকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, লকডাউনে দূরপাল্লার যত্রী পারাপার এ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সে কিভাবে যাত্রীপারাপার করছে। উত্তরে চালক জানায়, “ পেটের ক্ষিধা তো আর লকডাউন মানতে চায়না।” সড়কে পুলিশী বাধার মুখে পড়লে যাত্রী কিভাবে পৌঁছাবে। জানতে চাইলে চালক ফের জানায় , ফাঁকফোঁকর দিয়ে টেনে চলে যাওয়া যাবে। ভাড়ায় চালত তার ওই গাড়িটি স্থানীয় মিলন নামের একজনের মালিকানার।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কঠোর লকডাউনের নিষিদ্ধ এই সময় দূরপাল্লা যাত্রীপারাপার এ সকল ব্যাবস্থা করে দেয়। এরা বিচ্ছিন্নভাবে যাত্রীরসাথে দরদাম করে যাত্রী ঠিক করে। পর্যাপ্ত যাত্রী হলে পরে তারা নির্দিষ্ট গাড়ীকে লাইনে আনে। গাড়ী এসেই দ্রুত যাত্রীদের উঠিয়ে মহুর্তেই ষ্টেশন পার হয়।
জাবেদ হোসেন নামের একজন এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তিনি যমুনা সার্ভিস এর চালক। এছাড়া তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন সবুজ,মিলন, মোরশেদ,ফারুক,জাহাঙ্গির প্রমুখ।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক মো.আনোয়ার হোছাইন আকন্দ মুঠোফোনে জানান, গোপনে যাত্রী পারাপারের এ বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তথাপি বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এখনই সেখানে অভিযান করা হবে। তিনি আরও জানান, লকডাউন বাস্তবায়নে লক্ষ্মীপুরে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান ও জরিমানা আদায় করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *