দিগন্তের আলো ডেস্ক :
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে গত আট মাসে ১শ’ ৬৬টি অভিযোগ আপোষ মীমাংসা হয়েছে। এ আপোষ মীমাংসার ফলে সাধারণ মানুষ পুলিশ সুপারের (এসপির) এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায, গত (জুন ২০১৯) থেকে (ডিসেম্বর ২০১৯) পর্যন্ত ৮ মাসে উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে বিভিন্ন অজুহাতে মোট ২শ’ ৯টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ১শ’ ৬৬টি অভিযোগ আপোষ মীমাংসা হয়েছে। বাকী ২৬টি পরামর্শত্রুমে কোটে প্রেরন করা হয়েছে, ২টি থানায় এফআইআর করা হয়েছে, আর ১৫টির কার্যত্রুম চলমান রয়েছে।
উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে সুফল পাওয়া আকলীমা আক্তার জানান, তাঁর বাবা অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে তিন বছর আগে বিয়ে দেয়। স্বামী মো. জুয়েল হোসেন পেশায় একজন ড্রাইভার সে পিকাপভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতো। বিয়ের ১বছর পরেই তাদের সংসারে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে সুন্দর শিশু ছেলে তার নাম রাখা হয় জাহিদুল ইসলাম ছোট নাম মায়ের নামের সাথে মিলিয়ে রাখা হয় আকিব। আকিবে বয়স ১ বছর পার না হতেই তাদের সংসারে নেমে আসে এক অন্ধকার কালো মেঘ। স্বামী-স্ত্রী দুজন, একে অপরকে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্বামী জুয়েল স্ত্রী আকলিমাকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। অনেক দিন ছোট শিশু আকিবকে নিয়ে কষ্ট করার পর উপায়ন্ত না দেখে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে স্বামী জুয়েল হোসেন বিরুদ্ধে অভিযোগ করে স্ত্রী আকলিমা। এর পর উভয়কে উইমেন্স সার্পোট সেন্টার থেকে নোটিশ করা হলে তাদের দুজনের বক্ত্যব শুনে এস আই শাহীন আক্তার, আকলিমা ও জুয়েলের বিরোধ মীমাংসা করে দেন।
আকলিমা আরো জানান, উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে মীমাংসার পর তাদের সংসার জীবন ভাল চলছে।
উইমেন্স সার্পোট সেন্টারের দায়িত্বে নিয়োজিত এস আই শাহীন আক্তার জানান, একাদিক বিয়ে, যৌতুকের দাবী, বিবাহ বিছিন্ন এ ধরনে ঘটনার অভিযোগ নিয়ে পুলিশ সুপার স্যারের নিকট লোকজন আসলে স্যার আমাকে দায়িত্ব দেন, আমি সঠিক ভাবে তা পালন করে থাকি, গত আট মাসে উইমেন্স সার্পোট সেন্টারে ১শ’ ৬৬টি অভিযোগ আপোষ মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে তারা ভাল আছে।
এ ব্যাপারে লাহারকান্দি ইনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুশু পাটওয়ারি জনান, আমার এলাকার একাদিক বিয়েসহ কয়েকটি ঘটনার মীমাংসা হয়েছে। এতে উপকারভোগীরা খুশি।
লক্ষ্মীপুর আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী হাছিবুর রহমান জানান, অনেক নীরিহ গরীব মানুষ গ্রামের কিছু টাউট-বাটপারের খপ্পরে পড়ে হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের উইমেন্স সার্পোট সেন্টার চালু হওয়ার কারনে নীরিহ লোক গুলো সেবা পাচ্ছে এতে আমরা আনন্দিত।
তিনি আরো বলেন, যে গুলো আপোষ করা সম্ভব হয় না, সে অভিযোগ গুলোকে কোটে পরামর্শ ও থানায় মামলার জন্য পাটাচ্ছেন, এটা খুবই ভাল উদ্যেগ।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ডক্টর এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানান, উইমেন্স সার্পোট সেন্টারের মাধ্যমে আমার টিম কাজ করে, অনেক গুলো পরিবারের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ মিটিয়ে তাদেরকে পূনরায় স্বামী সংসার করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে গরীব অসহায় পরিবারের লোকজন যারা ন্যয় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তারাই এখানে সঠিক বিচার পাচ্ছে। আমার কাছে অভিযোগ বা আবেদন যেটাই আসুক আমি আমার টিমকে দিয়ে সঠিক ভাবে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করি।