লক্ষীপুর লকডাউন, কঠোর অবস্থানে প্রশাসন” লুকোচুরি খেলছে জনগণ,

চন্দ্রগঞ্জ লক্ষ্মীপুর সদর

সাহাদাত হোসেন দিপু :
সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে লক্ষীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ তৎপরতায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
লক্ষীপুরে সাতদিনের লকডাউনের আজ সোমবার পঞ্চম দিনেও কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। সকাল থেকে লক্ষীপুর শহরে এবং সদর উপজেলার মান্দারী, ও চন্দ্রগঞ্জ ,মানুষের যাতায়াত অন্যদিনের চেয়ে খুবই কম লক্ষ্য করা গেছে। নিত্যপণ্যের দোকানপাট ছাড়া অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু দোকান খোলা রাখতে দেখা গেছে। জেলা শহরের চারিপাশ ঘিরে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে, পুলিশ বিজিবি, ও সেনাবাহিনীর, যৌথ টহল দলকে শহরের বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। বেলা বাড়ার সাথে জরুরী প্রয়োজনের নামে কিছু মানুষ রাস্তায় বের হলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সেসব মানুষের বাইরে বের হওয়ার কারণ যাচাই করে। তবে শহরের অলিগলিতে গ্রামের চা দোকানে মানুষকে অযথা বাইরে বের হয়ে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। পুলিশ সদস্যদের দেখলেই তারা সটকে পড়ছেন।

এর আগে ২ জুলাই লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দের নেতৃত্বে ও লক্ষীপুর জেলার পুলিশ সুপার ডা. এইচ এম কামরুজ্জামান পিপিএম সেবার সমন্বেয়ে যৈাথ উদ্যেগে লকডাউন বাস্তবায়নে লক্ষীপুর সদর , রায়পুর, চন্দ্রগঞ্জ, অভিযান পরিচালনা করেন ,এই সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১১৯টি মামলা ও ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এইসময় জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, জেলায় সংক্রমণের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা আশা করবো জনগণ সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবেন।
শহরে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও চলছে ইজিবাইক, ও মোটরসাইকেল। দূরপাল্লার কোন যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। লক্ষীপুর-ডাকা মহাসড়ক, লক্ষীপুর-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, লক্ষীপুর-ফেনি মহাসড়ক, লক্ষীপুর-কুমিল্লা, সড়কের প্রবেশদ্বারে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল চলছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। মাঝেমধ্যে চলছে বিজিবির টহল। সেনাবাহিনীর তৎপরতা ছিল প্রশংসনীয়, শহর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে লক্ষীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে. পুলিশ, বিজিবি, ও সেনাবাহিনীর, পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত লকডাউন বাস্তবায়নে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ,অটোরিকসা ও মোটর সাইকেলসহ রাস্তায় বের হওয়া বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহণের গতি রোধ করে তাদের বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করছেন এবং ক্ষেত্র বিশেষে জরিমানাও করছেন। জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও, প্রশাসনকে পাহারা দিয়ে গলির মোড়ের দোকানগুলো খোলা রাখতে দেখা গেছে। এছাড়াও গলির মোড়গুলোতে মানুষজনকে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। পুলিশের গাড়ির সাইরেনের শব্দ শুনলেই তারা সটকে পড়ছেন। এ যেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তাদের লুকোচুরি।

এদিকে লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানিয়েছেন, টানা লকডাউনের আজ পঞ্চম দিন লক্ষীপুরবাসীকে লকডাউন মোকাবেলায় আরও সচেতন হওয়ার উদাত্ত আহবান জানিয়ে, স্ব্যস্থবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জেলার জনসাধারণকে আবারও স্বরণ করে দিয়ে বলেন, লকডাউন চলাকালে লক্ষীপুর জেলার সর্বত্র (পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত) কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। জরুরী প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *