দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ভর্তি বাতিল করা হয় সাজিদ নামে আরেক ছাত্রের।
গত ২১ জুলাইয়ের মারামারির ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ পরিচালনা কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়। এ ঘটনাটি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল আমিন।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলো— এসএসসি পরীক্ষার্থী সারোয়ার জামিন নাঈম, প্রিয়ন্ত চৌধুরী ও সায়েদুল ইসলাম প্রকাশ। দশম শ্রেণির ব্যবসায় শাখার আদিয়াতুল আলম ভুবণ, ফাহিম হাসান ও মো. হামিদ। এ ছাড়া ভর্তি বাতিল করা হয় মো. সাজিদের।
জানা গেছে, গত ২১ জুলাই দুপুরে ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফিরছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফাহাদ ইসলাম শাফিন। এ সময় একই প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থী নাঈম ও তার সহযোগীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শাফিনকে বেদম মারধর করে নাঈম ও আদিয়াতুল আলম ভুবনরা।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মো. ইব্রাহীম ঘটনাটি শুনে বিচার করেন। বিচারে শাফিনকে দোষী সাব্যস্ত করে থাপ্পড় ও কান ধরে ওঠবস করান। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি নাঈম ও তার সহযোগীরা।
পরে স্কুলটির পার্শ্ববর্তী পাটোয়ারীর রাস্তার মাথা নামক স্থানে নাঈমরা পুনরায় মারধর করে শাফিনকে। এতে মারাত্মক আহত হয় সে।
এদিকে এ ঘটনায় শাফিনের মা পারভীন আক্তার রায়পুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন নাঈমদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজেও অভিযোগ করেছিলেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, নাঈম ও আদিয়াতুল আলম ভুবনরা উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির ছেলে। ভয়ে কখনো শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করত না।
এ ঘটনায় আহত শাফিনের মা পারভীন আক্তার বলেন, গত ২১ তারিখ অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীরা আমার ছেলেকে দুই দফা মারধর করে মারাত্মক আহত করে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের জন্য থানায় ও স্কুলে অভিযোগ করি। এতে প্রতিষ্ঠানটি ছয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও একজনের ভর্তি বাতিল করে।
রায়পুর থানার এসআই কমল দে বলেন, স্কুলছাত্রকে মারধরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে আসতে না পারলেও বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। শাফিনের আম্মু থানায়ও অভিযোগ করেছেন। সেখানেও অভিযোগটি প্রমাণিত হওয়ায় নাঈম ও আদিয়াতুল আলম ভুবনসহ অভিযুক্তদের ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।