দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
লক্ষ¥ীপুরের কমলনগরে একটি নারিকেল গাছ-কাটাকে কেন্দ্র করে বিবি আমেনা (৫৫) ও তাঁর ছেলে আনোয়ারকে (৩২) কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে দেবর আব্দুল আলীর বিরুদ্ধে। বর্তমানে মা-ছেলে লক্ষ¥ীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন।
এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের চর লরেঞ্জ গ্রামের মুকবুল মাঝি বাড়িতে এমনি নির্দয় হামলার ঘটনা ঘটে। তবে পুরো ঘটনাকে নাটক সাজাতে হামলাকারী আব্দুল আলী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ আহতদের। অভিযুক্ত আবদুল আলী ওই বাড়ির মৃত- মুকবুল মাঝির ছেলে। আহতরা হলেন, একই বাড়ির মৃত-মুকবুল মাঝির বড় ছেলে মৃত রুহুল আমিরে স্ত্রী আমেনা বেগম, তার ছেলে আনোয়ার হোসেন ও মেয় জান্নাত বেগম।
এদিকে হামলার সময় মোবাইলফোনে দারণকৃত একটি ভিডিও ফুটেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায় হামলাকারী আব্দুল আলী ও তার পরিবারের লোকজন হামলা চালিয়ে ভাতিজা আনোয়ারকে লাঠি দিয়ে বেদম পিটাচ্ছে। এসময় মা-ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চরলরেন্স এলাকার মুকবুল মাঝি বাড়িতে সাড়ে তিন একর জমি নিয়ে বিবি আমেনা ও তার দেবর আব্দুল আলীদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার দিন বিকেলে আনোয়ার ঘরের পাশে শ্রমিক দিয়ে একটি নারিকেল গাছ কাটার চেষ্টা করেন। এতে আব্দুল আলী ও তার স্ত্রী বিবি হাজেরা, মেয়ে মুন্নি বেগম ও জুটি বেগম একত্রিত হয়ে আমেনা ও জান্নাতের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা লোহার রড ও দা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে এবং কুপিয়ে আমেনা বেগমকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে আনোয়ারকে ঘর থেকে বের করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় আবদুল আলী। এতে আনোয়ারের মাথা পেটে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে স্থানীয়রা মূমুর্ষ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা দেয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলার বাদী জেসমিন আক্তার জানান, তার শ্বশুর অনেক আগে মারা যান। জায়গাজমি ভাগাভাগি নিয়ে তার শ্বশুরের সঙ্গে চাচা শ্বশুরের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। সামান্য গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে চাচা শ্বশুর ও তার মেয়েরা লোহার রড, দা দিয়ে আমার শাশুড়ি, মেয়ে ও আমার দেবরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তিনি।
তবে আব্দুল আলী দাবি করেছেন, আমার জায়গা থেকে তারা নারিকেল গাছ কাটার চেষ্টা করলে বাধা দিই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার মেয়ে, স্ত্রী ও আমাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। আমরাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মা-ছেলেকে হামলা চালিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।