ভাইকে বেঁধে বোনকে ট্রাকের উপর তুলে গণধর্ষণ!

বাংলাদেশ

 

দিগন্ত ডেস্ক :-

গাজীপুরের টঙ্গীতে থানা থেকে পাঁচশত গজের মধ্যে ছোট ভাইকে গাছের সাথে বেঁধে বিউটি পার্লারকর্মীকে ট্রাকের উপর তুলে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে টঙ্গীর তিস্তা রোড়ের হকের মোড় এলাকায় শুক্রবার রাতে।

এ মোড়ে হক বিস্কুট ফ্যাক্টরী, লিভার বাদ্রার্স ও কোকাকোলা পানীয়সহ বেশ কয়েকটি কারখানা ও দোকানপাট রয়েছে। আর এ পাঁচশ গজের মধ্যে রয়েছে একজন প্রতিমন্ত্রী, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাসস্থান। গাজীপুর শহর থেকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিকল্প ব্যাস্ততম রাস্তার মোড় হলো এই হক বিস্কুটের মোড়।

এ মোড় হয়েই টঙ্গী পূর্ব থানার গেট হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন সড়কে যেতে হয়। এছাড়া টঙ্গীর বিভিন্নস্থানে চুরি ছিনতাইসহ বহু অঘটন ঘটে থাকে। অনেকেই পুলিশের ঝামেলা এড়াতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন না। আবার অভিযোগ দায়েরের পর অনেকেই উল্টো ঝামেলার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসির অভিযোগ টঙ্গীতে আইন শৃংখলার অবনতি হয়েছে। তবে এঘটনায় রিকসা চালকের বুদ্ধিমত্তায় পুলিশ ধর্ষণকারী ৪ ট্রাক চালককে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে ইতোমধ্যে। তারা হলো, তোফাজ্জল, নয়ন, বাবু ও শহীদুল ইসলাম।

এলাকায় পরিবহনের ঠিকাদার হলেন সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী এক যুবলীগ নেতা। এঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা হয়েছে। টঙ্গীতে রোববার দিনভর আলোচনার ঝড় বইছে প্রতিমন্ত্রীসহ জনপ্রতিনিধিদের বাসস্থান ও থানার পাশেই এ ঘটনা ঘটছে,তাহলে এ থানার অজোপাড়াগায়ের আইনশৃংখলার কি অবস্থা তা ধারণা করাই দুস্কর।

মামলার বাদী মেয়েটির বাবা বাবুর্চি ইব্রাহিম জানান, তার চার মেয়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি দ্বিতীয়। তিনি অভাবের তাড়নায় মেয়েটিকে সম্প্রতি টঙ্গী বাজারের একটি বিউটি পার্লারে চাকরি দেন। মেয়েটি শুক্রবার রাতে বিউটি পার্লারের মালিকের স্থানীয় চেরাগ আলী মার্কেটের বাসায় একটি বিয়ের দাওয়াত খেতে যায়। মেয়েটি শুক্রবার রাত ১১টায় প্রতিবেশী এক ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে রিকশা যোগে স্থানীয় মিরাশপাড়ার বাসায় ফিরছিল।

পথিমধ্যে ৪/৫ জন যুবক তাদের রিকশার গতিরোধ করে এবং মেয়েটির প্রতিবেশী ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এ সময় যুবকরা মেয়েটিকে জোরপূর্বক স্থানীয় নিটল টাটা মটরস্ ও এ্যাকুয়া পেন্ট কারখানার মাঝামাঝি এলাকায় দাঁড়ানো একটি ট্রাকের উপর উঠিয়ে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তাদের বহনকারী রিকশাচালক থানায় গিয়ে পুলিশ এনে ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার ও ৪ ধর্ষককে হাতেনাতে আটক করে।

রিকশাচালক শামীম জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ‘হক’ এর মোড়ে বখাটে যুবকরা লাঠি হাতে নিয়ে তার রিকশার গতিরোধ করে এবং তার দুই যাত্রীকে ধরে দুই দিকে নিয়ে যায়। মেয়েটিকে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একটি ট্রাকে উঠানো হয় এবং ছেলেটিকে পিঠমোড়া দিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। রাতে ওই রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে অনেক ট্রাক দাঁড়িানো ছিল। পরে তাকে (রিকশাচালককে) ছেড়ে দিলে সে থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, রিকশাচালকের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে তাকে সাথে নিয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ট্রাকটিকে ঘিরে ফেলেন। এসময় ট্রাক থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার ও চার ধর্ষককে হাতেনাতে আটক করেন। শনিবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এরা কোকাকোলা কোম্পানীর টঙ্গীর ডিপুর পরিবহন শ্রমিক বলে পুলিশকে জানায়। তবে আইবিপিএল এর গণসংযোগ কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, গ্রেফতারকৃতরা তাদের কোম্পানীর কোন কর্মচারী নন; এমনকি এরা তাদের কোম্পানীর কোন পরিবহণ এজেন্টের কর্মচারীও নয় বলে তিনি দাবী করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *