সাহাদাত হোসেন দিপু :-
শিখবে শিশু হেসেখেলে
শাস্তিমুক্ত পরিবেশ পেলে।
এই পরিবেশ যথার্থ করতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন অনুকূল সময়। শিক্ষা একমুখী ব্যাপার নয়। এটা অবশ্যই দ্বিমুখী; প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় যার একপ্রান্তে অবস্থান করে ৫ থেকে ১০-১২ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থী এবং অন্যপ্রান্তে শিক্ষক।
তাই পরিবেশকে শিখন শেখানোর জন্য ইতিবাচক করতে হলে দু’পক্ষেরই ন্যূনতম স্বার্থ বা সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি।
মফস্বল ও গ্রাম এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশুরা ভোরবেলা আরবি শিক্ষা গ্রহণ করতে স্থানীয় মক্তব বা মাদ্রাসায় যায়। সেখান থেকে ফিরে তারা আসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাই সকাল ৯টা থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরুর ফলে অনেক শিশুই প্রথম পিরিয়ড বা সারা দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছে।
এ ছাড়া যারা আসছে, তারাও কেউ খেয়ে বা না-খেয়ে। আবার দুই শিফটে পরিচালিত বিদ্যালয়ের ৩য় থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটির সময় বিকাল ৪টা। ফলে তারা হারাচ্ছে খেলাধুলার সুযোগ। ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে লাখ লাখ শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ।
অন্যদিকে সম্মানিত শিক্ষকদেরও বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে ঠিক ৯টার আগেই। সব শিক্ষক বাড়ির কাছাকাছি চাকরি করেন না। ফলে নিজস্ব বাহন (সাইকেল বা মোটরসাইকেল) কিংবা প্রচলিত যানবাহনে করে দূরের বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়ে ৯টায় পাঠদানের কার্যক্রম শুরু করা বেশ কষ্টসাধ্য হচ্ছে।
আর ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষকদের চিরন্তন সাংসারিক কাজ সেরে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়াও বেশ কষ্টসাধ্য। তবুও সরকারি চাকরির কড়া বিধিবিধানের চাপে সব শিক্ষকই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থল উপস্থিত থাকছেন। কিন্তু এমন চাপাচাপি আর বিধির বেড়াজালে তারা তাদের মানসিকতা কতটা ইতিবাচক রাখতে পারছেন, ভেবে দেখা দরকার; সর্বোপরি, এমন পরিস্থিতি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনে কতটা সহায়ক, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি বিনীত অনুরোধ, যুগোপযোগী মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবান্ধব করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত করা হোক।