দিগন্তের আলো ডেস্ক
টেস্ট কিট নয়, এবার বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কুকুরের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হবে। যুক্তরাজ্যের ‘মেডিকেল ডিটেকশন ডগস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রশিক্ষিত এসব কুকুর প্রশিক্ষিত কুকুর ঘণ্টায় ৭৫০টি করোনা টেস্ট করতে পারবে!
করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বের যেসব দেশ টেস্ট করত হিমশিম খাচ্ছে তাদের জন্য এটা হতে চমৎকার এক সমাধান। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম), ডারহাম ইউনিভার্সিটি এবং মেডিকেল ডিটেকশন ডগস নামের একটি সংগঠন সম্মিলিতভাবে কুকুরের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সনাক্তের সম্ভাবনাটি অনুসন্ধান করছে।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন ও ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তর-পূর্ব লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্য নিতে চান। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সব অসুখ ও ভাইরাসের নিজস্ব কিছু গন্ধ থাকে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর শরীরের কিছু নমুনার গন্ধ প্রথমে শুঁকতে দিতে হবে কুকুরদের। তারপর তাদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করার চেষ্টা করা যেতে পারে।’
এর আগে ম্যালেরিয়া, ক্যানসার, পার্কিনসন্স ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন আক্রান্ত রোগীদের গায়ের গন্ধ শুঁকে বা তাদের শরীর থেকে নেওয়া কোনও নমুনার গন্ধ শুঁকে অসুখ চিহ্নিত করেছে লন্ডনের ওই সংগঠনের প্রশিক্ষিত কুকুরেরা। কুকুরের এই ঘ্রাণশক্তির সাহায্যে অসুখের গন্ধ বিচারের বিষয়টিও তাই এবার করোনার সংকটে কাজে লাগাতে চায় ব্রিটেন।
লন্ডনের মেডিক্যাল ডিটেকশন ডগস সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ক্লেয়ার গেস্টের কথায়, ‘প্রশিক্ষণ দিলে কুকুর কভিড-১৯ ভাইরাস চিহ্নিত করতে পারবে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। তবে কীভাবে সংক্রামিত রোগীর কাছ থেকে ভাইরাস সংগ্রহ করে আমরা নিরাপদে তা কুকুরের সামনে তুলে ধরব, এখন সেটাই দেখার। আমাদের লক্ষ্য, কুকুরকে এমনভাবে ট্রেনিং দেওয়া যাতে তারা করোনা রোগীর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক অবস্থায় থাকা রোগীদেরকেও চিহ্নিত করতে পারে। এর ফলে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসও উপকৃত হবে।’
সংগঠনের কর্মকর্তাদের দাবি, কুকুরদের করোনার গন্ধ বিচারের জন্য আগামী ছ’সপ্তাহ বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হবে। তারপরই মহামারির আকার নেওয়া এই অসুখকে প্রতিহত করতে তাদের কাজে লাগানো শুরু হবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, কুকুর গন্ধ শুঁকে নির্ভুল শনাক্ত করে। এক্ষেত্রেও তারা পারদর্শী হয়ে উঠলে তাদের রোগীদের গায়ের গন্ধ শুঁকিয়ে দেখানো হবে। এর ফলে কোনও ইঞ্জেকশন বা অন্য কোনও কিটের সাহায্যে করোনাভাইরাস চিহ্নিত করার দরকার পড়বে না।
ব্রিটেনে এরই মধ্যে মহামারি আকার নিয়েছে করোনা। আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ২১৭ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৪৬৪ জনের। এদিকে এর মধ্যেই করোনা টেস্টের কিটের অভাব দেখা দিয়েছে ব্রিটেনে। এই অবস্থায় কুকুরদের ঘ্রাণশক্তি কাজে লাগানো গেলে তা অনন্য নজির গড়বে।
সূত্র- বিজনেস ইনসাইডার।