দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড মানস চন্দ্র দাস তথ্য গোপন করে চাকুরী করেন নিজ জন্মস্থান রামগতি উপজেলায়। নিজ এলাকায় চাকুরী করার সুবাদে এলাকার লোকজনকে নানা হুমকি ধমকি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন এ কর্মকর্তা। তার ভয়ে অনেক ভুক্তভোগী মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।
তার পিতার নাম অমল চন্দ্র দাস। জন্মস্থান উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকায়। ৩৭ ব্যাচের বিসিএস এ কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ রামগতিতে এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করেন। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে থেকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। এখনো ওই এলাকায় রয়েছে তাদের বেশ কিছু জমিজমা ও আত্মীয় স্বজন। এ সকল তথ্য গোপন করে তিনি তার নিজ জন্মস্থানেই চাকুরী করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় নিশিরাতে সরকারের একসনা বন্দোবস্ত নেওয়া দোকান মালিকদের উচ্ছেদ, নামজারীতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পের অধীনে রামগতি উপজেলার চর-বাদাম ইউনিয়নে পূর্ব চরসীতা পাইলট গ্রামে সরকারী গণকবর নির্মাণ না করে অন্যত্র পরিত্যক্ত যায়গায় খালপাড়ে নির্মাণ, বিচারিক ক্ষমতা ব্যক্তিগত সুবিধা ব্যবহার, তথ্য গোপন করে সরকারী চাকুরী সহ নানান অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এসিল্যান্ডের মামা শশী চন্দ্র দাস বলেন,আমাদের বর্তমান এসিল্যান্ডের বাড়ী উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর উত্তর পাড়া এলাকায়। তিনি রঘুনাথপুর পল্লী মঙ্গল স্কুলে ক্লাস ফোরে লেখা পড়া করা অবস্থায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকায় চলে যান। তার বাবা অমল চন্দ্র দাসও পল্লী মঙ্গল জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তবে জন্মগতভাবে এসিল্যান্ড রামগতির সন্তান। তার এক বোনের বাড়ী উপজেলার জমিদার-হাট এলাকায়।
চর-বাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চরসীতা গ্রামে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্পাধীন ২৪ একর সরকারি খাস জমির উপর গণকবর নির্মাণ না করে দখলদারদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে গণকবর নির্মাণ করার প্রস্তাবনা দেন পরিত্যক্ত খাল পাড়ে অরক্ষিত যায়গায়। বর্তমানে ওই গণকবরটি আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মানস চন্দ্র দাস বলেন, এগুলো জেনে আপনি কি করবেন। পারলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে বদলির ব্যবস্থাটা করেন বলে নানা হুমকি প্রদান করেন এ প্রতিবেদকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, তার বাড়ী ও পূর্বপুরুষ বাড়ী রামগতিতে ছিল। তারা পরে রামগতির পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলা চলে যায়। এতে এলাকার লোকজন তার থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে না পেরে নানা অপবাদ দিচ্ছে।
রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দীন আজাদ সোহেল বলেন,আমাদের এসিল্যান্ডের জন্মস্থান এ উপজেলায়। তিনি এ উপজেলার পল্লী মঙ্গল স্কুলে লেখাপড়া করছেন। সরকারি বিধানমতে তিনি এখানে চাকুরী করতে পারেননা। উনি তথ্য গোপন করে রামগতিতে চাকুরী করছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।