দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান সাগর এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে যেকোনো সময় নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে গভীর নিম্নচাপ ও প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে ২৬ মে রাতে। ঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৯০ কিলোমিটার।
শনিবার (২২ মে) সন্ধায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে ২৩ মের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারতের দিকে ধেয়ে আসতে যাওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘যশ’। এর নামকরণ করেছে ওমান।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় প্রথমবারের মতো শনিবার চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দেশের মানুষের কাছে ঘূর্ণিঝড় আমফানের স্মৃতি এখনও টাটকা। আর এরই মাঝে যশের আগমনের খবরে আতঙ্কিত উপকূল অঞ্চলের মানুষজন। সরকার আগে থাকতেই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য নানারকম পদক্ষেপ নিতে শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে সমুদ্রের মৎস্যজীবীদের সোমবারের মধ্যেই উপকূলে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মঙ্গলবার থেকে সমুদ্র যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ‘উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছে সেটি যদি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এ রূপান্তর হয়, তবে তা এক পর্যায়ে শক্তিশালী ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পুরো উপকূলকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা উপকুল অঞ্চলের সব জেলার জেলা প্রশাসককে সতর্ক থেকে ঘূর্ণিঝড়েরর গতিবিধি লক্ষ্য রেখে সব ধরণের প্রস্তুতি নিতে বলেছি। মন্ত্রণালয়ও সব রকম দুর্যোগ মোকাবিলায় ও জান-মালের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
‘ঘূর্ণিঝড়’ আসার আগে দেশে প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া বিরাজ করছে। তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে মৃদৃ থেকে মাঝাড়ি তাপপ্রবাহ। এদিকে, সাগরে শক্তি বাড়িয়ে আগামী ২৬ শে মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া অফিস।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে রোববার। আন্দামানের উত্তরে এবং পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি এলাকায়ই তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালী হয়ে ২৪ সোমবার নাগাদ একটি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝরের আকার নেবে। এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ২৬ শে মে বিকেল থেকে রাতের মধ্যে যেকোনো সময় ঘণ্টায় ৬৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়বে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলে। যার জেরে ২৫ তারিখ থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে।