ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা

অপরাদ

দিগন্তের আলো ডেস্ক :
স্বজনদের আহাজারি মর্মান্তিক। বর্বর। পাশবিক। চাচাত ভাইয়ের কু-দৃষ্টি পড়েছিল এক মাদ্রাসাছাত্রীর ওপর। আর সেই লালসা চারিতার্থ করতে ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যা করে তাকে। পাশবিক এ ঘটনার নায়ক আক্তার হোসেন নিশান। যে ওই ছাত্রীর আপন চাচাতো ভাই। গতকাল বিকালে নিশান ফেনীর আদালতে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়।
হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায়। নিশাতের জবানবন্দি অনুযায়ী ওই রাতে নিশান তার চাচির অনুপস্থিতিতে ওই ছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চাচাত বোনের মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ওই ছাত্রী চিৎকার দিয়ে সবাইকে বলে দেয়ার হুমকি দিলে তার মাথায় আঘাত করে নিশান। এতে সংজ্ঞা হারায় ওই ছাত্রী। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে দোতলার ছাদের চিলেকোঠায় নিয়ে যায়। সেখানে থাকা নাইলনের রশিতে ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করে। রশিতে ঝুলাতে ব্যর্থ হয়ে ওই কক্ষের একটি ড্রামে থাকা ছুরি দিয়ে চাচাত বোনের গলায় পরপর তিনবার আঘাত করে। শ্বাসনালি কেটে হত্যা নিশ্চিত করার পর ছাদ লাগোয়া একটি গাছ বেয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যায় সে। এর আগে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য গতকাল বিকাল ৩টার পর গ্রেপ্তার হওয়া আক্তার হোসেন নিশানকে ফেনী সদর কোর্টের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে হাজির করা হয়। প্রায় দু’ঘণ্টার জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেন নিশান সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের কালিদহ গ্রামের আনোয়ার ড্রাইভার বাড়ির মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে।

নিহতের মা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বড় মেয়েকে ইসলামকে নিয়ে পাশের বাড়ি বেড়াতে যান তিনি। ওই সময় ঘরে ছোট মেয়ে ও তার বৃদ্ধ শাশুড়ি ছিলেন। রাত ১০টার দিকে পাশের বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফিরে ছোট মেয়েকে না দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। এক পর্যায়ে সিঁড়ি বেয়ে বাড়ির ছাদে উঠলে ছাদের চিলেকোঠা ঘরে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেয়।

নিহতের বড় বোন জানান, গত বুধবার ছোট বোনের জন্মদিন থাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে বোনের জন্য গিফট নিয়ে বাবার বাড়ি আসেন। ঘটনার সময় তাদের একমাত্র ভাই পার্শ্ববর্তী মসজিদে ইতেকাফে ছিল।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর হায়দার জানান, এ হত্যার ঘটনায় জিঙ্গাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতেই নিহতের চাচাতো ভাই আক্তার হোসেন নিশানকে আটক করে পুলিশ। গতকাল সকালে নিহতের ভাই বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, মরদেহের গলায় ছুরির আঘাত রয়েছে। শ্বাসনালী কেটে যাওয়ায় কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। তবে কিশোরীকে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) এএনএম নুরুজ্জামান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রশি, বালতি, খুনির জুতোসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *