দিগন্তের আলো ডেস্ক
জুয়া খেলা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘষের্ বরগুনায় একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম সাইফুল ইসলাম সবুজ (২২)। তিনি স্থানীয় ফারুক পহলানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অধ্যয়নরত। এ ঘটনায় আরো আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় সবুজকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।
বুধবার রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকালে রায়ভোগ গ্রাম থেকে স্থানীয় মাসুক, রাজা, বাসুদেবসহ চারজনকে জুয়া খেলা অবস্থায় হাতেনাতে আটক করে বরগুনা সদর থানার পুলিশ। পরে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়।
এরপর ছাড়া পেয়ে জুয়ারিরা তাদের সহযোগীদের নিয়ে যারা পুলিশকে খবর দিয়েছে তাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
আহতদের মধ্যে ইউসুফ (৪০), আবদুল বারেক (৫০), আবুল কালাম (৬৫), আলমগীর (৪০), শাহাবির (২৫), গোলাম রসুল (৪৫), রুবেল (২৫), বেলায়েত হোসেন (২১) সরোয়ার পহলানের (৪৫) নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে সরোয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী চার জুয়াড়িকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সবুজের লাশ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাপক পরিমাণ সরকারি সহায়তাসহ ওএমএস’র চাল বিতরণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এমন চিন্তা করে জেলা প্রশাসক মহোদয় কিছুদিন পরে এই চাল বিতরণ করতে বলেছেন।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যবান্ধব বিশেষ প্রকল্প ফেয়ার প্রাইসের ১০ টাকা কেজির চাল পাবে ইউনিয়নভিত্তিক কার্ডধারী দুস্থ পরিবার। খাদ্যবান্ধব এই কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীরা বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা কিংবা ওএমএসসহ কোনো সুবিধা নিতে পারবেন না।
কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় বর্তমানে কার্ডধারী দুস্থ পরিবারের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭২৩ জন।
একই ঘটনা ঘটেছে ১৩ এপ্রিল রাতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলনের ভাই ইউনিয়নের ফেয়ার প্রাইস চালের ডিলার কামাল মন্ডলের গুদামে বিপুল পরিমান সরকারি চাল বিতরণ না করে মজুদ করে রেখেছে। এমন সংবাদ পেয়ে রাতেই অভিযান চালায় কুষ্টিয়া র্যাব-১২ এর সদস্যরা। সেখানে যেয়ে র্যাব সদস্যরা চার শ’ বস্তা সরকারি চাল মজুদ অবস্থায় দেখতে পান।
স্থানীয় ডিলার কামাল মন্ডল জানান, ২ এপ্রিল তিনি চাল উত্তোলন করে গুদামে নিয়ে আসেন। কিন্তু প্রশাসন থেকে তাকে বিতরণের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। তাই ১২ দিন ধরে তার গুদামে এই চাল পড়ে আছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোয়ার হোসেন জানান, এতে খাদ্য বিভাগের কিছুই করার নেই। জেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সিদ্ধান্তে বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এখন বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ১০৮ জন ডিলারের মাধ্যমে ইউনিয়নভিত্তিক কার্ডধারী দুস্থ পরিবারের মাঝে এসব চাল বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৯ হাজার ১২৫ কার্ডধারী দুস্থ পরিবারে মাঝে চাল বিতরণ করবে ২৪ ডিলার, কুমারখালী উপজেলায় ১৪ হাজার ৩৪২ পরিবারে বিতরণ করবে ৩৩ ডিলার। খোকসা উপজেলায় ৪ হাজার ২৩৫ পরিবারের মাঝে বিতরণ করবে ৯ ডিলার, ভেড়ামারা উপজেলায় ৮ হাজার ১৩৯ পরিবারে ১৫ ডিলার, মিরপুর উপজেলায় ৪ হাজার ১১০ পরিবারে বিতরণ করেন ১৩ ডিলার এবং দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭০২ জন কার্ডধারী দুস্থ পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করেন ১৪ ডিলার। প্রতিবছর মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে বছরে পাঁচবার ১০ টাকা কেজিতে প্রতি পরিবারে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত মতে, প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে এসব চাল ডিলারদের উত্তোলন করে সপ্তাহের রবি, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার তিন দিন কার্ডধারী উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করতে হবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, জেলার সব ডিলারদের দুই-তিনদিনের মধ্যে চাল বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো ডিলার দ্রুত সময়ের মধ্যে চাল বিতরণ না করলে তার কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাল নিয়ে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।