ছাত্র আন্দোলনে নিহত আফনানের মরদেহ উত্তোলন, মা-বোনের আহাজারি

লক্ষ্মীপুর

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান পাটওয়ারীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মামলার তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে দাফনের ৩০ দিন পর তার মরদেহ উত্তোলন করেছে প্রশাসন। এ সময় আফনানের মা নাছিমা আক্তার ও বোন জান্নাতুল মাওয়াসহ স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগরের বাস টার্মিনাল এলাকায় পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

এর আগে, গত ৫ আগস্ট আফনানের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল। তাই মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালত মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মেজবাহীজ্জুলাম চৌধুরী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের তত্ত্বাবধানেই আফনানের মরদেহ পুনরায় দাফন করা হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন বলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক মামলার তদন্তের স্বার্থে নিহত আফনানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেন। তাই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে আমাদের তত্ত্বাবধানেই পুনরায় মরদেহ দাফন করা হবে।

জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরে মাদাম ব্রিজ-ঝুমুর এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। তখন তাদের গুলিতে শিক্ষার্থী আফনান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার আরমানি মিঝি মসজিদ বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। ১৪ আগস্ট রাতে আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আফনান ছাড়াও আরও তিনজন শিক্ষার্থী নিহত হন। তাদের মধ্যে ৪ সেপ্টেম্বর সাব্বির হোসেন রাসেল ও ২ সেপ্টেম্বর ওসমান গণির মরদেহ আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় দাফন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *