সাহাদাত হোসেন (দিপু) ঃ-
থানা মানেই টাকা। টাকা ছাড়া থানায় কোনো কাজ হয় না। এমন ধারণা জনসাধারণের। তবে জনসাধারণের সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছেন চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন। এ থানায় সেবা নিতে আসা লোকজন টাকা ছাড়াই এখন সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ ও মামলা লেখা বা অন্তর্ভুক্ত করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র অনেকেই।
এর আগে লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দেড় বছর কাজ করার পর চন্দ্রগঞ্জ থানায় ওসি হিসেবে গত ২২/০২/২২ ইং তারিখে যোগদান করেন মোসলেহ উদ্দিন। যোগদানের পর থেকে থানায় প্রবেশের প্রধান ফটকের পাশে গোল ঘরে দুইজন অফিসারকে প্রতিদিন পালাক্রমে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাদের কাজ হচ্ছে সেবা নিতে আসা জনগণের অভিযোগ শোনা এবং প্রয়োজনে তা কাগজে লিখে নেয়া। প্রয়োজনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অভিযোগ ও মামলা লেখা বা অন্তর্ভুক্ত করা। এসবের বিনিময়ে সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেয়া হয় না।
ওসি মোসলেহ উদ্দিন এই থানায় যোগদানের পর থেকেই এখানে দালালদের দৌরাত্ম কমে গেছে। ইতিমধ্যে তিনজন দালালের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা ভুক্তভোগীদের ফেরত দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় দালালদের সতর্ক করে থানায় তদবিরের জন্য না আসতে বলা হচ্ছে। সেবা প্রার্থীরা দালাল ছাড়াই নির্দ্বিধায় থানায় আসা-যাওয়া করতে পারছেন।
করতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে দিতে হতো কম টাকা দিতে হয় না সেবা নিতে আসা জনসাধরণকে। ছাত্র সিয়াম উদ্দিন জানান, তার একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। থানায় জিডি করার জন্য এসেছিলেন। কীভাবে লিখবেন বুঝতে পারছিলেন না। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় তিনি নিজেই কাগজে লিখলেন এবং সেটি জমা দিলেন। তবে এর বিনিময়ে কোনো টাকা গুনতে হয়নি তাকে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার মান্দারী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, থানায় অভিযোগ করার সময় সব ঘটনা খুলে বলি ওসি স্যারকে। এরপর থানায় ডিউটিরত একজনকে দিয়ে অভিযোগ লিখে নিয়ে আসতে বলেন। এরপর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে আসাামর স্ত্রী ও শ্যালককে থানায় নিয়ে আসে। তাদের নিকট থেকে আমার গচ্ছিত দুই লক্ষ টাকা উদ্ধার করে দেয়া হয়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সেবা প্রার্থীদের সকল ধরনের সহযোগিতা করার জন্য থানার সকল অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই চেয়ারে বসে মানুষের সেবা করা সম্ভব। আরও আগে আসলে বেশি সেবা দিতে পারতাম।
লক্ষীপুর জেলার মাননীয় পুলিশ সুপার ডাঃ এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন মোসলেহ উদ্দিন আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্টে সৎ ও নীতিবান অফিসার । তার সেবাদানের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো রকম অভিযোগ পাওয়া যায়নি। জনগণের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ।