চন্দ্রগঞ্জে লীজ নবায়ন না করায় ভূমিদস্যুর সংবাদ সম্মেলন, ক্ষোভ

চন্দ্রগঞ্জ

দিগন্তের আলো ডেস্ক :-
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত (দেওপাড়া মৌজার সাবেক ১৭৭৪/১৭৭৫) জমির লীজ (নথি) নবায়ন না করায়, নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, লীজ গ্রহিতা দাবিদার আনোয়ার হোসেন। বৃহস্পতিবার চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আফজাল রোডের মোড়ে রাস্তার দক্ষিণপাশে জামায়াতে ইসলামীর একটি আস্তানায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, দখলবাজ ভূমিদস্যু হিসাবে পরিচিত সোনাইমুড়ির বটগ্রাম গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইজারা গ্রহিতা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বটগ্রাম গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে জানান, “চন্দ্রগঞ্জ মাইজ বাজারস্থ দেওপাড়া মৌজার অধীন সাবেক ১৭৭৪ ও ১৭৭৫ দাগের জমির মালিক ও দখলকার তারা। এই জমির সাথে থাকা ১৭৭৩ দাগের ১৫ শতাংশ জমির মধ্যে ৫ শতাংশে তাদের মালিকানাধীন ও সরকারি সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া বাকী ১০ শতাংশ জমি মধ্যে গরুহাটা সংলগ্ন ৫ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের দখলে থাকায় প্রেসক্লাবের পিছনের অংশের শরীফ প্লাজা নামীয় এশিয়া ব্যাংক ভবনসহ টিনসেডের ভিতরের সেমি পাকা ৫ শতাংশ ভূমি তারা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে লীজ নিয়ে ভোগদখল করে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে লীজকৃত জমিটি স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসিনতা ও অসহযোগিতার কারণে লীজ নবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে দাবী তার। এমনকি লীজের কাগজপত্র নিয়ে ধারে ধারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি বরং শর্ত ভঙ্গের দায়ে প্রশাসন তাদের লীজ বাতিল করে দেন বলে জানান। অথচ ওই সময়ের কিছুদিন পরেই লীজের আবেদনের উপর ভিত্তি করে চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের স্থাপনা নির্মাণ করে। সম্প্রতি নিজেদের জায়গা দাবী করে আনোয়ার হোসেন প্রেসক্লাবের পিছনে-দক্ষিণপাশে তাদের দখলে থাকা সরকারি জায়গায় সেমি পাকা টিনসেডের ঘরটি শরীফ প্লাজা নামীয় এশিয়া ব্যাংক ভবনের সাথে একত্রিত করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করতে গেলে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বাধা প্রদান করা হয় বলে দাবী করা হয়। এতে তার পরিবারসহ তিনি চরম ক্ষুব্ধ হন। ফলে তিনি ভূমি প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নানা বিশোদগার ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তার অধিকার হরনের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন।
এদিকে লীজ নবায়ন না করায় তারা (আনোয়ার হোসেনের) পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে হাইকোর্টে সিভিল রিভিউশন মামলা (মামলা নং-১২৯৭) দায়ের করেন বলে জানান। মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে। এছাড়া মামলায় প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে পক্ষভূক্ত রয়েছে বলে জানা যায়। ফলে হাইকোর্টে মামলা ও পক্ষভূক্তদের কারণে লীজ গ্রহিতা ও মামলার বাদীপক্ষ উক্ত জমিতে বর্তমানে তাদের স্থাপনাসহ নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রাখে। কিন্তু সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রেসক্লাবটি পুণঃরায় সংস্কার করতে গেলে এতে ভেজায় ছটে যান আনোয়ার হোসেন গংরা। প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবী বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে জমিটির ইজারা গ্রহিতাদের পক্ষে আনোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন, সরকারি জায়গায় তাদের বহুতল ভবন নির্মাণ কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষথেকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, সরকারি জায়গায় ইমারত কিংবা বহুতল নির্মাণ করা অবৈধ। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নিষেধ ও সতর্ক করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *