গ্যাসের হাহাকারে ধুঁকছে লক্ষীপুর জনদুর্ভোগ বেড়েছে অতিমাত্রায়।

লক্ষ্মীপুর সদর

 

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ-

গ্যাস না থাকায় ইলেকট্রিক চুলায় রান্না করছেন এক গৃহিণী। শুক্রবার বিকালে লক্ষ্মীপুর শহরের দক্ষিণ তেহমুনী এলাকায়
গ্যাস না থাকায় ইলেকট্রিক চুলায় রান্না করছেন এক গৃহিণী। শুক্রবার বিকালে লক্ষ্মীপুর শহরের দক্ষিণ তেহমুনী এলাকায়ছবি: প্রথম আলো
ঘরের বাইরে মাটির চুলা পেতে রান্না করতে বসেছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কলেজ রোড এলাকার গৃহিণী ফাতেয়া বেগম। চারদিকে রান্নার জিনিসপত্র ছড়ানো-ছিটানো। চোখ ডলতে ডলতে চুলায় ফুঁ দিচ্ছিলেন ফাতেয়া। প্রায় দুই মিনিট চেষ্টার পর আগুন জ্বলে। এরপর শুরু করেন রান্নাবান্না। এটাই তাঁর প্রতিদিনের কাজ। মাটির চুলায় রান্না না হলে পাঁচজনের সংসারে সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে।

আক্ষেপ করে ফাতেয়া বেগম বলেন, ‘দুই মাস আগে দিনের বেলা মোমবাতির মতো টিমটিম করে চুলা জ্বলত। দিনে গ্যাস না থাকলেও রাত ১১টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যেত। রাত জেগে, কষ্ট করে বাড়ির রান্নার কাজ করতাম। কিন্তু এক মাস ধরে দিন-রাতের কোনো সময় ঠিকমতো গ্যাস পাচ্ছি না। ইলেকট্রিক চুলা বা সিলিন্ডার গ্যাসে রান্নার সামর্থ্য নেই।’

তীব্র গ্যাস-সংকটের কারণে লক্ষ্মীপুরের পুরো জেলায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকেরা। বাখরাবাদ গ্যাসের গ্রাহকেরা গ্যাস না পেয়ে রান্না করতে পারছেন না। নিরুপায় হয়ে অনেকে মাটির চুলা, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার ও বৈদ্যুতিক চুলা দিয়ে রান্নার কাজ সারছেন।

ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা বলছেন, গ্যাস-সংকটে দিনের বেলা রান্নার চুলা জ্বলছে না। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সামান্য গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ সময়ের গ্যাস তেমন কাজে লাগছে না। অনেকে এখন লাইনের গ্যাসের পাশাপাশি এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। এতে খরচ বেড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

পৌর শহরের উত্তর তেহমুনীর বাসিন্দা আহসান কবির বলেন, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজন চাকরি করেন। অফিস থেকে রাতে বাসায় ফিরে রান্না করার মতো সময় থাকে না। সকালে সারা দিনের রান্না করতে হয়। ভোরে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। বাইরে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেতে হচ্ছে।

দক্ষিণ তেহমুনী এলাকার সালমা বেগম বলেন, ‘গ্যাস-সংকট দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। দিন-রাতের কখনোই চুলায় গ্যাস পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে কখনো গ্যাসের সিলিন্ডারে, কখনো মাটির চুলায় রান্না করি।’

বাখরাবাদ গ্যাসের লক্ষ্মীপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে তাদের আবাসিক সংযোগ আছে ৭ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০টি বাণিজ্যিক সংযোগ আছে। লক্ষ্মীপুরে মোট ৮ হাজার ঘনমিটার চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ আছে মাত্র দুই হাজার ঘনমিটার।

লক্ষ্মীপুর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এক মাস ধরে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। গ্রাহকেরা নিয়মিত অভিযোগ করছেন। কিন্তু তাঁরা কোনো সমাধান দিতে পারছেন না।

সুত্র প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *