দিগন্তের আলো ডেস্ক :
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। সোমবার ভোরে শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় বেগম জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার কিছুটা শ্বাসকষ্ট থাকলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে। বেগম জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক মানবজমিনকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার এবং মঙ্গলবার বেগম জিয়ার দু’টি পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত চেকআপগুলো করা হয়েছে।
মেডিকেল বোর্ড এসব পরীক্ষার রিপোর্টের পর্যালোচনা করেছেন। এই চিকিৎসক বলেন, সর্বশেষ ম্যাডামের করোনা পরীকক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
এদিকে মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মহান মে দিবস উপলক্ষে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে আমরা সবাই নিশ্চয়ই উদ্বিগ্ন। আপনারা সবাই শুনেছেন যে, গতকাল তার একটু শ্বাসকষ্ট হওয়ায় সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। এখনও তিনি সিসিইউতে আছেন। অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। এখন তিনি স্থিতিশীল আছেন। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ্র কাছে তার জন্য দোয়া চাইছি, সমস্ত দল নয়, সমগ্র জাতি আজকে প্রার্থনা করছেন। দোয়া করছেন, এই দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের শেষ আশ্রয়স্থল, যাকে গণতন্ত্রের একমাত্র প্রহরী বলা যায়, তিনি (খালেদা জিয়া) যেন অতি দ্রুত সুস্থতা লাভ করেন।
এদিকে করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তার দল ও পরিবার। সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের অনুমতির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তারা। কিন্তু স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে সরকারের অন্যান্যদের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে এমন আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ১০ই এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট হলেও ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর ২৭শে এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
ওদিকে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ নেয়ার জন্য কোনো আবেদন করা হয়নি। আবেদন করলেও আদালতের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতির বিষয়ে সরকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। গতকাল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন । তিনি আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী মুক্তি দিয়েছে। এখন তাকে বিদেশে নিতে গেলে আদালতে যেতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কতটুকু প্রয়োজন এবং তা দেশে সম্ভব কিনা তা সরকার বিবেচনা করে দেখবে।