দিগন্তের আলো ডেস্ক
দেশের বিভিন্ন স্থানে গত মঙ্গলবার ও বুধবার কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ডসহ ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিহত হয়েছে ছয়জন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদম-
বরগুনা : গতকাল বুধবার কালবৈশাখী ঝড়ে বরগুনায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে জায়েদা বেগম (৪০) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। নিহত ওই নারী সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ছোট লবণগোলা গ্রামের বাসিন্দা।
মিঠাপুকুর (রংপুর) : রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে দেশসেরা ‘হাঁড়িভাঙা’ আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় এক লাখ মণ আম ঝরে পড়েছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এ ছাড়া ভুট্টাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসলেরও ক্ষতি হয়। কালবৈশাখীর ছোবলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে শুরু হওয়া ঝড়ের সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে থাকে। সেই সঙ্গে প্রবল বেগে বয়ে যায় বাতাস। প্রায় দেড় ঘণ্টা স্থায়ী এই ঝোড়ো হাওয়ায় অসংখ্য বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
চিতলমারী-কচুয়া (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বৈশাখী ঝড়ে বসতঘরের ওপর গাছচাপায় ইমন মল্লিক (১৩) নামে এক মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। নিহত ইমন হিজলা শেখপাড়া গ্রামের মো. আনসার মল্লিকের ছেলে। সে হিজলা আলিম মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এ ছাড়া কালবৈশাখী ঝড়ে হিজলা গ্রামের ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম তাত্ক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন।
ধামইরহাট (নওগাঁ) : নওগাঁর ধামইরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে ছাদ ধসে কাবেজ উদ্দিন (৩০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে উপজেলার জাহানপুর সরকারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টির কারণে ইরি-বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জিরাশাইল ধানের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) : কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গতকাল বুধবার সকালে বজ পাতে হেদায়েত উল্লাহ (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার দক্ষিণ শাকতলী গ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত আবদুল লতিফের ছেলে। হেদায়েত উল্লাহ কৃষিকাজের পাশাপাশি স্থানীয় ওমরগঞ্জ বাজারে পানের ব্যবসা করতেন।
বামনা (বরগুনা) : বরগুনার বামনায় কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার উত্তর সোনাখালী গ্রামে একটি বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছেন মো. আমজেদ হোসেন (৬০) নামের একজন। গতকাল বুধবার সকালে বামনা উপজেলার সোনাখালী গ্রামে ঝড়টি আঘাত হানে। বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিধ্বস্ত হওয়া পরিবারগুলোকে তাত্ক্ষণিক দুই বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ছয় হাজার টাকা অনুদান দেন।