কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বন্ধ ঘোষণা

বাংলাদেশ

দিগন্তের আলো ডেস্ক ঃ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বন্ধ
নারী ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য জিপসি বড়ুয়া পর্যটকদের সতর্ক করছেন, ডানে লাল পতাকা
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কঠোর লকডাউন চলছে।

করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দেশের বিভিন্ন জেলার পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্রের সঙ্গে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিল্লুর রহমান যুগান্তরকে জানান, ১ এপ্রিল মধ্য রাত থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

পর্যটকদের জন্য বিচ বন্ধ থাকলেও আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য দোকানপাট আপাদত খোলা থাকবে।

বুধবার থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। জিপসি বড়ুয়া নামে এক নারী ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য হ্যান্ড মাইকের সাহায্যে পর্যটকদের করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছিলেন।একইসঙ্গে যারা বিচে মাস্ক ছাড়া এসেছিলেন, তাদেরকে মাস্ক বিতরণ করে তা পড়িয়ে দিচ্ছিলেন।

এদিকে যুগান্তরের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ দেশে করোনা পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ আকার ধারণ করায় জেলার সব পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

একইসঙ্গে তিনি, এই মুহূর্তে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে এবংব্যাপক সচেতনতা বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছেন।

এ কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট।

অনেকেই যারা কক্সবাজার বিচে বেড়ানোর জন্য এসেছেন, তারা সবাই হোটেলবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছেন।অনেকেই দুর্ভোগকে সঙ্গি করে যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে।

এবারও কক্সবাজারের হোটেল ব্যবসায় ধ্বস নামবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে অবস্থিত অভিযাত হোটেল ব্যা ওয়ান্ডারের কর্মকর্তা মো. কায়সার জানান, পর্যটন শহরটিতে ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ৭৫০টি হোটেল, মোটেল, গেস্ট হউজ ও রেস্ট হাউজ আছে।

হোটেল ব্যা ওয়ান্ডারের কর্মকর্তা মো. কায়সার

এর মধ্যে ৪৫০টির মতো নিবন্ধিত এবং বাকি ৩০০টির মতো অনিবন্ধিত।গত বছরের মার্চ থেকে শুরু হওয়া টানা চার মাসের লকডউনে হোটেল রেস্তোরাঁ ছাড়াও পর্যটনকেন্দ্রীক সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লোকসান গুনতে হয়েছে।

এখন পর্যন্ত অনেক প্রতিষ্ঠান গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ওঠতে পারেনি।তার মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে সমুদ্র সৈকত।এর ফলে আবারও লোকসানে পড়তে হবে অনেক প্রতিষ্ঠানকে।

তিনি জানান, তাদের ব্যা ওয়ান্ডার্সে ৬০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডাবল ও সিঙ্গেল রুম আছে।এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ২৫ জন কর্মী কাজ করেন।গতবছর করোনার সময় হোটেলে পর্যটক না থাকলেও অর্ধেক কর্মী ছাটাই করে বাকিদের মেইনটেইনেন্সের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।

এতে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও কর্মীদের বেতন দিতে গিয়ে প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা করে লোকসান গুণতে হয়েছে।

করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশ পর্যটকরাও। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা এক পর্যটক বীর মুক্তিযুদ্ধা মো. জামাল মোল্লা জানান, এক সপ্তার জন্য কক্সবাজার এসেছিলেন।কিন্তু হঠাৎ করে বিচে লকডাউন ঘোষণা করায় অগত্যা তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়িতে।

ইনানি বিচে লকডাউনের আগে পর্যটকরা

তার মতো অনেক পর্যটককেই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।তাদের প্রত্যাশা খুব শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে সবখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *